গ্রাম-শহর সীমান্ত এলাকা বা শহরতলির বৈশিষ্ট্য:
(1) শস্য-উৎপাদন সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক হারে করা হয়। বিশেষত ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন প্রচুর পরিমাণে এই শহরতলি অঞ্চলে করা হয়।
(ii) জনগণের এক বৃহৎ অংশ এই অঞ্চল থেকে প্রত্যহ শহরে (কর্মস্থলে) উন্নতমানের কাজে যোগদানের জন্য যাতায়াত করেন। সুতরাং, একে "দৈনন্দিন যাত্রী বলয়" বলা যায়।
(iii) রেল ও সড়কপথে এই অঞ্চলের সঙ্গে শহরের যোগাযোগ খুব উন্নতমানের হয়।
(iv) শহরের কিছু মানুষ এই অঞ্চলে এসে বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করেন। আবার গ্রামের মানুষ শহরের এই সীমান্ত এলাকায় অপেক্ষাকৃত উন্নত জীবনযাপনের জন্য এসে বসবাস করতে থাকেন। সুতরাং বলা যায় যে, It is the transition zone between town and country. The Rural-urban fringe also known as outstrikers or the urban hinterland can be described as "the landscape interface between town and country.
গ্রাম-শহর সীমান্ত এলাকায় বিমানবন্দর, গল্ফ খেলার মাঠ, রেস কোর্স, আবর্জনা বিশ্বদকর প্ল্যান্ট, বড়ো বড়ো গুদামঘর এবং কৃষিখামারযুক্ত ঘর গড়ে ওঠে।
(vi) জমির ব্যবহারের প্রকৃতি অনেকটা প্রগাঢ় ধরনের। জমিতে পচনশীল দ্রব্যের উৎপাদন কর হয়। যেমন- শাকসবজি উৎপাদন, ফল ও ফুলের উৎপাদন, দুগ্ধজাত দ্রব্যের উৎপাদন এই অঞ্চলে করা হয়।
(vi) বসতভূমি ও শিল্পের এলাকার সম্প্রসারণ ঘটতে থাকে। শহরের আয়তন এখানে ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
(viii) জমির প্লটগুলির এবং কৃষিজমির আয়তন কম হয়।
(2x) সামাজিক সুযোগ-সুবিধা এবং জনগণের চাহিদা পূরণের সুযোগ-সুবিধাগুলি পর্যাপ্ত নয়।
(x) জমির ব্যবহারের প্রকৃতি সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে। কৃষিজমির ব্যবহার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরে উন্নীত হচ্ছে।
(xi) বিভিন্ন প্রমোটারগণ বসবাসের কলোনি (residential colony) তৈরি করেন।
(xii) এই অঞ্চলকে প্রকৃতপক্ষে সবুজ বলয় বা সবুজক্ষেত্র বলা হয়।
(xiii) কলেজ, স্কুল, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, বসত এলাকার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হয়।
(xiv) এই অঞ্চলে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাসের প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
(xv) এই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন প্রত্যেক শহরে তাঁদের কর্মস্থলে যাতায়াত করেন।
(xvi) প্রশাসনিক দিক থেকে এই অঞ্চলে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা দেখা যায়। এখানে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজ করার পর অপরাধীরা অন্য এলাকায় পলায়ন করে।
উদাহরণ: বৃহত্তর কলকাতার সীমান্তে অবস্থিত ডায়মন্ডহারবার, বারুইপুর, সোনারপুর, বারাসাত (উত্তর ২৪ পরগনা) এই স্থানগুলি কলকাতা মহানগরের 'শহরতলি' অঞ্চল। পরবর্তীকালে এদের বেশ কিছু অঞ্চল মূল নগরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু স্থান এভাবে মূল নগরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। যেমন- হুগলি জেলার ডানকুনি।