এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ
1950 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে বেশ দ্রুত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই দুই মহাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি হল-
(i) চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতির ফলে মৃত্যুহার কমে যাওয়া।
(ii) এই দুই মহাদেশে জন্মহার অধিক ছিল এই সময়।
(iii) এশিয়া মহাদেশে নগরায়ণের হার খুব বেশি ছিল।
(iv) অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং দারিদ্র্য দূরীভূত হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ দেখা দেয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির এটিও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
(v) সবুজ বিপ্লবের ফলে ভারতে কৃষিতে খুব উন্নতি ঘটে। এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে শ্রমিকের জোগান দরকার হয়। ফলে কৃষক পরিবারগুলিতে পরিবারের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হয়।
(vi) ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় মানুষের পাড়ি দেওয়ার ওপর নানারকমের বিধিনিষেধ ছিল।
( vii) এশিয়ার পশ্চিমভাগে এবং উত্তর আফ্রিকায় খনিজ তেলক্ষেত্র আবিষ্কারের ফলে অন্যান্য মহাদেশের হয়।
(viii) অশিক্ষা ও কুসংস্কার জনসংখ্যা বৃদ্ধির অপর উল্লেখযোগ্য কারণ।
ইউরোপের জনসংখ্যা: 1950 খ্রিস্টাব্দের পর ইউরোপ মহাদেশের জনসংখ্যা খুব ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার 1%-এর কম লক্ষ করা গেছে। ডেনমার্ক, জার্মানি, সুইডেন প্রভৃতি দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রায় শূন্যে পৌঁছায়। 1990 খ্রিঃ-2000 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ইউরোপের জনসংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এর কারণগুলি হল-
(i) নগরায়ণ দ্রুত হারে ঘটতে থাকায় সাধারণ মানুষের বসবাসের জায়গা কমে যাওয়া এবং জীবনধারণের জন্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের ধারণা অতিমাত্রায় তীব্র হয়।
(ii) প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির ফলে শিল্পক্ষেত্রে শ্রমিকের চাহিদা কমে যায়।
(iii) ছোটো পরিবারের প্রতি মানুষের ঝোঁক বৃদ্ধি।
(iv) কৃষিজমিতে শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস।
(v) পরিব্রাজনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।