ভারতবাসীর জীবনে নদ-নদীর প্রভাবঃ
অনুকূল প্রভাব: হিমালয় ও দাক্ষিণাত্যের খরস্রোতা নদীগুলি থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করে বিভিন্ন শিল্প কাজে ব্যবহৃত হয়। গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের পলি সঞ্চিত অববাহিকা, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরীর ব-দ্বীপ প্রভৃতি পলিগঠিত অঞ্চল উর্বর এবং কৃষিকাজে ব্যাপক উন্নতি করেছে। নদী জলপথ উত্তর ভারতের পরিবহণের বিশিষ্ট মাধ্যম। অধিকাংশ শহর ও শিল্পাঞ্চল পাণীয় ও শিল্পের প্রয়োজনীয় জল সরবরাহের জন্য এই নদীগুলির ওপর নির্ভরশীল। অসংখ্য ধীবর এই নদীগুলিতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। এই নদীগুলির জল দ্বারাই বিস্তীর্ণ কৃষিক্ষেত্র সেচ প্লাবিত করা সম্ভব হয়েছে। বহুমুখী নদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে বন্যারোধ, জলসেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি উদ্দেশ্য সাধিত হচ্ছে।
প্রতিকূল প্রভাব: রহ্মপুত্র, কোশী, দামোদর প্রভৃতি বন্যাপ্রবণ নদী মাঝে মাঝেই সম্পত্তি ও প্রাণহানির কারণ হয়। উত্তর ভারতে গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নদী নিম্নপ্রবাহে গতি পরিবর্তন করলে গ্রামবসতি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ব্যাপক নগরায়ন ও শিল্পোন্নয়নের ফলে প্রচুর দুষিত জল নদীতে পড়ে জলদূষণ (Water Pollution) বৃদ্ধি করেছে। গঙ্গানদীর জল দূষণমুক্ত করার জন্য নেওয়া হয়েছে গঙ্গা এ্যাকশন প্ল্যান (Ganga Action Plan)। এতে করে শহর ও শিল্পাঞ্চলের জল প্রাথমিক পরিশোধনের পরেই কেবল নদীতে গিয়ে পড়ার কথা।
উপসংহারঃ নদীর উপকারিতার তুলনায় অপকারিতা নগণ্য। ভারতে প্রাচীন সভ্যতা নদীতীরেই গড়ে উঠেছে এবং বর্তমানেও নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে বহু শহর, শিল্পকেন্দ্র ও আধুনিক আবাসভূমি।