welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

2001-2011 খ্রিস্টাব্দে ভারতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি (Growth of Indian Population, 2001-2011)

2001-2011 খ্রিস্টাব্দে ভারতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি (Growth of Indian Population, 2001-2011)



সাম্প্রতিককালে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমে আসছে। সুতরাং বলা যায় যে, ভারতের জনসংখ্যা ক্রমশ স্থিতাবস্থায় (stabilization) ফিরে আসছে। 1991-2001 খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় 184 মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু 2001 খ্রিস্টাব্দের জনসংখ্যার তুলনায় 2011 খ্রিস্টাব্দে জনসংখ্যা মাত্র 180 মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে অথাৎ, ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমে আসছে। 1991 থেকে 301 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় 21-54%। কিন্তু 2001 খ্রিস্টাব্দ থেকে 2011 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হয়েছে 17-64%। অর্থাৎ আগের দশকের চেয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রায় 3-9 কমে গেছে। এই প্রথম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এত কমে গেছে। 2011 খ্রিস্টাব্দের পরিসংখ্যা অনুসারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার হল 21%।

2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় আরেকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। দেখা যায় যে, জন্মের সময় শিশুর প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল (life expectancy at birth) আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুর জন্মের পর প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল হল 67 বছর যা অনেক উন্নত দেশের প্রায় নিকটবর্তী মানের সমান। নারী শিশুর প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল (68.1 বছর) পুরুষ শিশুর (65৪ বছর) চেয়ে বেশি। ভারতে বর্তমানে নারীদের মৃত্যুহার পুরুষের মৃত্যুহারের চেয়ে কম। এর প্রভাবে ভারতের জনসংখ্যায় নতুন বৈচিত্র্য লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতের জনসংখ্যার বিবর্তন লক্ষ করে দেখা যায় যে, বিগত দুটি দশকে ভারতের জনসংখ্যা অনেক স্থিতাবস্থায় পৌঁছেছে। 2001 খ্রিস্টাব্দ এবং 2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় জনসংখ্যার ভারসাম্য অবস্থা বোঝা যায়।

ভারতের জনসংখ্যায় ক্রমশ ভারসাম্য অবস্থা তৈরি হওয়ার কারণগুলি হল-

(i) ভারতে স্বাক্ষরতার হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

(ii) সমাজে নারীদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটেছে। এখনকার নারীরা অনেক আত্মসচেতন ও সমাজ  সচেতন। তাঁরা নিজের অধিকার দখল করে নিতে পারছেন।

(iii) মেয়েদের মধ্যে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে শিক্ষার প্রসার ঘটানো হচ্ছে।

(iv) নারীদের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এখন মেয়েদের বিবাহের গড় বয়স আগের দশকের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

(v) নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। 2041 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যা সম্পূর্ণভাবে ভারসাম্য অবস্থায় পৌঁছাবে বলে জনসংখ্যা-বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন। 

(vi) এই সময় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি বছরে 15 জন প্রতি হাজার এবং মৃত্যুহার 10 জন প্রতি হাজারের কম হবে।


ভারতে রাজ্যভিত্তিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (2011 খ্রিস্টাব্দ):

2011 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মেঘালয় রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক (27-82%)। অরুণাচল প্রদেশ (2592%) দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। বিহার রাজ্যে জনসংখ্যা (25.07%), জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে (23-71%), মিজোরামে (22-78%), ছত্তিশগড়ে (22-59%), ঝাড়খণ্ডে (22-34%), রাজস্থান রাজ্যে (21-44%), উত্তরপ্রদেশে (20-09%) এবং মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে (20-30%) জনসংখ্যা 20%-এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত 10 বছরের ভারতের রাজাভিত্তিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, 2001 খ্রিস্টাব্দ থেকে মধ্যবর্তী সময়ে।

2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় সর্বপ্রথম ভারতের ৪টি রাজ্যে Empowered Action Group গাঠন করা হয়েছে। এই ৪টি রাজ্য হল রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, বিহার, ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং ওড়িশা। 30টি company-কে 1951 খ্রিস্টাব্দ থেকে 2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের জনসংখ্যার গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। Empowered Action Group এবং Non-empowered Action Group - এই দুটি অংশ ভারতের রাজ্যগুলিকে বিভক্ত করা হয়েছে। Empowered Action Group এর অধীনস্থ রাজ্যগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক কমে আসছে।

ভারত সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের যে লক্ষমাত্রা ধার্য করেছিল তা থেকে 2011 খ্রিস্টাব্দে প্রায় 110 মিলিয়ন অধিক জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটেছে। 2001-2011 খ্রিস্টাব্দের মধ্যপ্রদেশের GDP বৃদ্ধির হার 10:2% প্রতি বছর, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির হার 1-15% প্রতি বছর এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার 1.64% প্রতি বছর।

শিশু-জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ 2001 খ্রিস্টাব্দে ছিল 163-8 মিলিয়ন এবং 2011 খ্রিস্টাব্দে শিশু-জনসংখ্যা এজির পরিমাণ হয় 158৪ মিলিয়ন। ভারতের অধিকাংশ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশ তিনি লক্ষ করা যায়। অতিরিক্ত হারে নগরায়ণ এবং পরিব্রাজন এই সব রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশ আমাদের দেশ জনসংখ্যা বিবর্তন তত্ত্বের Final Stage বা চূড়ান্ত অবস্থার দিকে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে (প্রদেশ কিংবা জেলাভিত্তিক) জনসংখ্যা বিবর্তনের চতুর্থ পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।


ভারতে অধিক জনসংখ্যার সমস্যা (Problems of Over-population in India) : 

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সেই দেশের জনসংখ্যার আয়তনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। ভারতের জনসংখ্যা অধিক, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও অধিক। ফলে দেশের উন্নয়নের হার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠতে পারছে না।

ভারতে জন্মহার অধিক, মৃত্যুহার ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। উচ্চ জন্মহার এবং ক্রমহ্রাসমান মৃত্যুহার ভারতে প্রকৃতপক্ষে জনবিস্ফোরণ (Population explosion) ঘটিয়েছে। জন্মহার কার্যকরীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। অন্যদিকে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কারণে শিশু মৃত্যু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

1. নিম্ন উৎপাদন হার (Low production rate): ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা নিরামিড পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, জন্মহার অধিক হওয়ায় মোট জনসংখ্যা অধিক। আবার মোট জনসংখ্যার মধ্যে শিশু ও কিশোরদের সংখ্যা অধিক। শিশু এবং কিশোরের উৎপাদনে যুক্ত থাকতে পারে না। ফলে দেশে মাথাপিছু আয় কম হয়। দেশের আর্থিক উন্নতির হার ব্যাহত হয়।

2. বেকারিত্ব (Unemployment): ভারতের অধিক জনসংখ্যার কারণে বেকারি একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিল্প বিকাশের হারের সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কোনো সংগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ বুদ্ধির অভাবে অধিক বেকারি ভারতীয় অর্থনীতির একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা দিয়েছে।

3. ছদ্মবেকারি (Disgused unemployment): ভারতের জনসংখ্যা অধিক। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি। ফলে বহু কর্মক্ষম মানুষ এমন সব অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে নিজেদেরকে নিযুক্ত করতে বাধ্য হয়, যা যথেষ্ট লাভজনক নয়। ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ছদ্মবেকারি বেশি লক্ষ করা যায়। একখণ্ড জমিতে পরিবারের সকল সদস্য ফসল উৎপাদনের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে। ব্যাবসাবাণিজ্য, শিল্পায়নের বিস্তৃতি ঘটলে কৃষিতে নিয়োজিত মানুষ শিল্প কিংবা ব্যাবসাবাণিজ্য নিজেদের নিয়োজিত করতে পারত।

4. দারিদ্র্য ও অপুষ্টি (Poverty and Malnutrition): ভারতের অধিক জনসংখ্যা এই দেশের প্রারিদ্র্য ও অপুষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। ভারতে মাথাপিছু আয় কম। ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০% দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে। দরিদ্র মানুষজন চিকিৎসার সুযোগ পায় না। নানাবিধ অসুখ-বিসুখে ভোগে।

5. শ্রমনিবিড় উৎপাদন (Labour intensive production): অধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশে মূলধন দ্রব্য (Capital goods) যেমন- যানবাহন, যন্ত্রপাতি ইত্যাদির জোগান হ্রাস পায়। সেক্ষেত্রে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পণ্য উৎপাদনের পরিবর্তে শিল্পে এবং কৃষিতে এখনও শ্রমনিবিড় (Labour intensive) কৃষি ও শিল্প ব্যবস্থা বিদ্যমান।

6. মূলধন গঠনের নিম্নহার (Low rate of Capital Accumulation): অধিক জনসংখ্যার কারণে ভারতে খাদ্য, বস্তু, চিকিৎসা, বাসস্থান প্রভৃতি খাতে জাতীয় আয়ের সিংহভাগ ব্যয় করতে হয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান প্রভৃতি আপাত উৎপাদক খাতে ব্যয় বেশি হতে থাকলে, দেশে মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং বিনিয়োগ ও মূলধন গঠনের সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

7. উচ্চ শিশুমৃত্যুর হার (High infant death rate): দারিদ্র্য এবং অপুষ্টির জন্য ভারতে শিশুমৃত্যুর হার অধিক।

 

ভারত সরকার জনসংখ্যা নীতি, 1976 (Population Policy of Government of India):

1976 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার 'ন্যাশানাল পপুলেশান পলিসি' (NPP) গ্রহণ করেন। ভারতে জনসংয্য বিস্ফোরণ (Population explosion) সংক্রান্ত সমস্যার বিশ্লেষণ এবং নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এই প্রসঙ্গে সরকার স্পষ্ট করে উল্লেখ করে যে, কেবলমাত্র জনশিক্ষা এবং আর্থিক উন্নয়নের দ্বারা এই সমস্যার আশু সমাধান করা সম্ভব নয়।

1976 খ্রিস্টাব্দের 'জনসংখ্যা নীতি'র বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ

(i) মেয়েদের ক্ষেত্রে বিবাহের বয়স ১৪ বছর এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে বিবাহের বয়স 21 বছর করার জন্য আইন প্রণয়নের প্রস্তাব রাখা হয়। জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে এই প্রস্তাব রাখা

(ii) দেশের সর্বত্র নারী শিক্ষার বিস্তারের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব রাখা হয়। কারণ নারীশিক্ষ এবং সন্তানধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

(iii) শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে জনসংখ্যার মান সম্পর্কে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব থাকে যাতে তরুণ সমাজ জনসংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারে।

(iv) জন্ম নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণকারী পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের জন্য অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাব।

(v) সমগ্র দেশব্যাপী গ্রাম-শহর নির্বিশেষে জন্ম নিয়ন্ত্রণের সুফল সংক্রান্ত বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা করা।

(vi) বন্ধ্যাত্বকরণ বাধ্যতামূলক করার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়ন না করার কথা বলা হয়। কারণ সারা দেশে বন্ধ্যাত্বকরণ কর্মসূচি প্রণয়ন করার মতো পরিকাঠামো সমানভাবে নেই।


ভারতের জনসংখ্যার নীতি, 2000 (Population Policy, 2000)


জনসংখ্যার নীতি, 2000 (Population Policy, 2000)

2000 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার আবার জনসংখ্যা নীতি ঘোষণা করেন।


নীতিসমূহ নিম্নরূপ-

1. প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং সমষ্টি উন্নয়ন কেন্দ্রের শক্তি বৃদ্ধি করা।

2. স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।

3. ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসকরা প্রসার বৃদ্ধি করা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত পরামর্শ দান কর্মসূচির সুযোগ বৃদ্ধি করা।

4. বেসরকারি চিকিৎসার যাতে নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন তার সুব্যবস্থা করা।

5. নারী শিক্ষায় অগ্রগতি ও মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার দিকে লক্ষ রাখার কথা বলা হয় যাতে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ও রুগ্ন শিশুর সংখ্যা কমানো যায়।

জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত সমস্যা সমাধানে চিন নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রবর্তনের কথা চিনের সংবিধানে বলা হয়েছে। চিনে পরিবার পিছু শহরে একটি সন্তান এবং গ্রামে পরিবার পিছু দুটি সন্তানের নীতি চালু আছে। বর্তমানে চিনে সর্বত্র পরিবার পিছু একটি সন্তান গ্রহণের নীতি গৃহীত হয়েছে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন চিনের কর্মসূচি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন ভারত সরকারকে। তাঁদের মতে ভারতের বিপুল জনসংখ্যাকে মানুষ মানব সম্পদে (Human Resource) পরিণত করতে হলে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি সুনিশ্চিত করতে হবে।

1. দেশের সর্বত্র গ্রাম-শহর নির্বিশেষে শিক্ষার প্রসার সুনিশ্চিত করতে হবে।

2. দেশের জনগণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। উপার্জনশীল মানুষ সহ সকল মানুষ যেন চিকিৎসার সুযোগ পান, তা দেখতে হবে।

3. অর্থনৈতিক দিক থেকে অনগ্রসর মানুষদের সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

4. দেশে কৃষির ভূমিসংস্কার কর্মসূচি সফল করতে হবে।

5. মুক্ত বাজার অর্থনীতি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

ভারত সরকারের জনসংখ্যা নীতি অনুসারে ২০২৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতে জনসংখ্যা স্থিতিশীল হবে। তবে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে এই স্থিতাবস্থার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ এই রাজ্যগুলিতে জন্মহার অধিক। অবশ্য ২০২১ থেকে ২০৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তামিলনাড়ু, কেরল ও পাঞ্জাবের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শূন্য হবে বলে সরকার মনে করেন। অনুমান করা হচ্ছে ২০৫১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনসংখ্যা হবে ১৬৪ কোটি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01