1971 খ্রিস্টাব্দ থেকে 2001 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিব্রাজনের ধারা (Trends and Patterns of Internal Migration in India, 1971-2001)
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অভ্যন্তরীণ পরিব্রাজন সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। 2011 খ্রিস্টাব্দের Census অনুসারে 109 মিলিয়ন ব্যক্তি পরিব্রাজনের আওতায় পড়েছেন, যা দেশের মোট লোকের 30%। 1971 খ্রিস্টাব্দের Census রেকর্ডে পরিব্রাজনের পরিমাণ ছিল মাত্র 159 মিলিয়ন। অর্থাৎ 1971 খ্রিঃ থেকে 2001 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পরিব্রাজন প্রায় 10 গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ত্রী-পুরুষ ভেদেও পরিব্রাজনের হারের পার্থক্য লক্ষণীয়।
"Analysis of migration pattern is important to understand the changes taking place in the peoples movement within the country: It is most volatile component of population growth and most sensitive to economic, political and cultural factors" (Singh, 1998).
ভারতে লিঙ্গভেদে পরিব্রাজন, 1971-2001:
1971 খ্রিস্টাব্দের Census অনুসারে 50 মিলিয়ন পুরুষ এবং 110 মিলিয়ন স্ত্রীলোক পরিব্রাজক ছিল। এই পরিমাণ ছিল দেশের মোট জনসংখ্যার 30.6%। 1981 খ্রিস্টাব্দে পরিব্রাজকের সংখ্যা হয় 201 মিলিয়ন, 1991 খ্রিস্টাব্দে 226 মিলিয়ন এবং 2011 খ্রিস্টাব্দে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২০০ মিলিয়ন। ভারতীয় পরিাজারদ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। মেয়েরাই বেশি পরিব্রাজন করে থাকে।
ভারতে জাতীয় স্তরে দেখা যায় যে, গ্রাম থেকে গ্রামে পরিব্রাজনের হার সবচেয়ে বেশি। গ্রামাঞ্চলের দেখা যায় যে, পুরুষ অপেক্ষা স্ত্রী লোকেদের মধ্যে পরিযানের হার বেশি। এক্ষেত্রে বিবাহকেই প্রধানত দাই করা হয়েছে। "Rural to Rural intradistrict migration of males seems to be due to their migration from areas of low agricultural productivity to sparsely populated areas with new development activities." (Gosal and Krishnan, 1975, Quoted in Premi. 1990).
সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম থেকে শহরে পরিব্রাজনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, জেলার মধ্যে, রাজ্যের মধ্যে এবং দেশের মধ্যে সময়ের সঙ্গেঙ্গ সামঞ্জস্য রেখে পরিব্রাজনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। 1981-1991 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রামে পুরুষদের পরিযানের ঋণাত্মক বৃদ্ধি লক্ষ করা যাচ্ছে।
1981 খ্রি.-2011 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পরিব্রাজনের বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, 7 টি প্রবনে গোষ্ঠীভুক্ত লোকের মধ্যে পরিব্রাজন সীমাবন্ধ আছে। এঁরা হলেন কর্মী শ্রেণি, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, বিরহ, জন্মের পর অন্যত্র চলে আসা, পরিবার সমেত পরিব্রাজন এবং অন্যান্য সম্প্রদায়। এক রাজ্য থেকে শুন রাজ্যে পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে বিবাহ অন্যতম সামাজিক কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের জনগণের পরিব্রাজন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে এই পরিব্রাজনের হার সবথেকে বেশি। তবে বর্তমানে ভারত থেকে ইংল্যান্ড, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মানি, ইটালি এই সমস্ত দেশে কর্মসূত্রে মানুষ বসবস করছেন। এঁদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ।
বিদেশ থেকেও ভারতে প্রচুর লোক এসে বসবাস করেন। আফ্রিকার অনুন্নত দেশগুলি, যেমন- নাইজেরিয় কেনিয়া, টোগো প্রভৃতি দেশের ফুটবল খেলোয়াড়গণ এদেশের বিভিন্ন ক্লাবে বছরের পর বছর ধরে খেলছেন। কিছু শ্রমজীবী সম্প্রদায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস করছেন।