ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ও সংজ্ঞা (Origin and Definition of Cyclone) :
1848 খ্রিস্টাব্দে ক্যাপটেন হেনরি পিডিংটন সর্বপ্রথম সাইক্লোন (Cyclone) শব্দটি ব্যবহার করেন। সাইক্লোন শব্দটি গ্রিক শব্দ 'kukloma' থেকে এসেছে, বাংলায় যার আভিধানিক অর্থ হল 'সাপের কুণ্ডলী'। স্ট্রলার (A. N. Strahler)-এর মতে, নিম্নচাপবিশিষ্ট কেন্দ্রকেই ঘূর্ণবাত বলে। স্থলভাগ কিংবা জলভাগের কোনো স্বল্প পরিসর স্থান হঠাৎ উত্তপ্ত হলে
ঘূর্ণবতের গঠন |
সেখানকার বায়ু হালকা হয় ও পার্শ্বচাপের ফলে ওপরে উঠে গিয়ে ওই স্থানে এক শক্তিশালী নিম্নচাপ কক্ষ বা কেন্দ্র (Low Pressure Cell or Center) গঠন করে। বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে ওই কেন্দ্রকে ঘিরে খাড়া বায়ুচাপীয় ঢাল তৈরি হয়। তখন চারদিক থেকে বাতাস প্রবল বেগে কুণ্ডলীর আকারে পাক খেতে খেতে কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং পর্যায়ক্রমে উয় ও ঊর্ধ্বগামী হয়। শক্তিশালী নিম্নচাপ কক্ষকে ঘিরে কেন্দ্র অভিমুখী ও ঊর্ধ্বগামী দ্রুতগতি সম্পন্ন উয় ঘূর্ণায়মান বায়ুকে ঘূর্ণবাত বলে। উত্তর গোলার্ধে এই প্রকার বায়ু বামাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ও দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার দিকে প্রবাহিত হয়। ঘূর্ণবাত ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয় মণ্ডলে লক্ষ করা যায়। কোনো কোনো স্থানে এটি প্রচণ্ড বিধ্বংসী আকার ধারণ করে।