উষ্ণতা বৈপরীত্য (Inversion of Temperature) :
স্বাভাবিক কারণে ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের উন্নতা হ্রাস পায়। উন্নতা হ্রাসের হার প্রতি 1000 মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে প্রায় 6-4° সেঃ। একে বায়ুমণ্ডলের পরিবেশগত তাপবিযুক্তি হার (Normal lapse rate) বলে। তবে কখনো কখনো বিশেষ পরিবেশগত অবস্থায় উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা হ্রাসের পরিবর্তে উন্নতা বৃদ্ধি পায়। বায়ুমণ্ডলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা বৃদ্ধির ঘটনাকে আবহবিদ্যায় উন্নতার বৈপরীত্য (Inversion of temperature) বলে। এই ঘটনা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি স্বল্প উচ্চতায় অথবা বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উচ্চতায় ঘটতে পারে। এই ঘটনা কখনো স্থিতিশীল, কখনো বা বায়ুমণ্ডলের অস্থিতিশীল অবস্থায় ঘটে থাকে।
প্রকারভেদ (Types of inversion of temperature) :
অবস্থান ও স্থিতিশীলতার প্রকৃতি অনুযায়ী উন্নতার উৎক্রম বা বৈপরীত্যকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলি নিচে সারণির মাধ্যমে প্রকাশ করা হল-
[I] উন্মুতার ভূমি বৈপরীত্য (Radiation Inversion):
ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে নানাকারণে উন্নতার ভূমি বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়। এগুলি নিচে বিশদভাবে আলোচনা করা হল-
(i) সঞ্চলনহীন বা বিকিরণজনিত উন্নতার বৈপরীত্য (Non-advectional or Radiation temperature inversion):
বায়ুর সঞ্চলন ছাড়াই বায়ুমণ্ডলে উন্নতার বৈপরীত্য ঘটলে, তখন তাকে স্থিতিশীল বা সঞ্চলনহীন উয়তার উৎক্রম বা উন্নতার বৈপরীত্য বলে। একে ভূপৃষ্ঠীয় বিকিরণজনিত উন্নতার উৎক্রম বা উন্নতার বৈপরীত্যও (Inversion of temperature due to earth's surface radiation) বলে। ভূপৃষ্ঠীয় বিকিরণের কারণে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুর দ্রুত শীতলীভবনের ফলে এই স্তরের বায়ুতে যে উন্নতার উৎক্রম লক্ষ করা যায় তাকে ভূপৃষ্ঠীয় বিকিরণজনিত উন্নতার বৈপরীত্য বলে। ভূপৃষ্ঠ এই বায়ুস্তর অপেক্ষা অধিক মাত্রায় তাপ বিকিরণ করে রাত্রিবেলায় দ্রুত শীতল হয়ে পড়ে। তাই শীতল ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ভূমিভাগের ওপরের বায়ুস্তর শীতল হয়ে পড়ে এবং অপেক্ষাকৃত উয় বায়ু শীতল বায়ুর ওপর অবস্থান করে। ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায় উন্নতার উৎক্রম বা উয়তার বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়।
• সৃষ্টির কারণ: যেরূপ বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থায় উন্নতার বৈপরীত্য লক্ষ করা যায় সেগুলি হল-
(a) দীর্ঘ ও পরিষ্কার শীতকালীন রাত্রি, পরিষ্কার আকাশ বা উঁচু মেঘমুক্ত আকাশ, অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ও শান্ত বায়ু এবং তুষারাবৃত বা হিমায়িত ভূভাগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভূমিভাগের নিকট উন্নতার বৈপরীত্য ঘটে।
(ক) দিনের বেলায় প্রাপ্ত সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের তুলনায় দীর্ঘ ও পরিচ্ছন্ন শীতকালীন রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠীয় বিকিরণজনিত তাপমাত্রা হ্রাসের হার অধিক হয়। তাই ভূপৃষ্ঠ শীতল হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পায়। আকাশে যখন মেঘ থাকে না, তখন সূর্যাস্তের পরই দ্রুত হারে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরের বিকিরণজনিত শীতলীভবন ঘটে। অন্যদিকে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠের বিকিরণজনিত উন্নতা হ্রাসের প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুর তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে। বিপরীতভাবে শুষ্ক বায়ুস্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে শোষণ করতে পারে না। তাই ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি না পেয়ে শীতল হতে থাকে।
(খ) বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে বায়ুতে যখন বিশেষ কোনো সঞ্চালন ঘটে না, তখনই বায়ুমন্ডলের নিচের স্তরে উম্নতার বৈপরীত্য ঘটে। কারণ বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে খুব একটা মিশ্রণ ঘটে না। ফলে ভূপৃষ্ঠ শীতল হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পায়।
(গ) উচ্চ অক্ষাংশের তুষারাবৃত ভূপৃষ্ঠের ওপর উয়তার বৈপরীত্য সর্বাধিক লক্ষ করা যায়। এই অঞ্চলের ভূভাগে পতিত সৌর বিকিরণ ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত না করেই মহাশূন্যে ফিরে যায় (অ্যালবেডো)। ফলে দিনেরবেলায় ভূভাগ বিশেষ উত্তপ্ত হতে পারে না। অন্যদিকে, রাত্রিবেলায় বাধাহীনভাবে পার্থিব বিকিরণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠ তাপ হারায়। পুনরায়, তুষার তাপের কুপরিবাহী হওয়ায় তুষারমধ্যস্থ তাপ বিকিরিত হতে পারে না। ফলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু দ্রুত শীতল হয় এবং তাপমাত্রার বৈপরীত্য বিকাশ লাভ করে। এই ধরনের পরিবেশগত অবস্থা তুহিন সৃষ্টির পক্ষে আদর্শ।
(b) উন্নতার বৈপরীত্য মেরু অঞ্চলের এক সাধারণ বৈশিষ্ট্য। নাতিশীতোয় অঞ্চলের তুষারাবৃত ভূমিভাগে শীতকালীন রাতে উন্নতার বৈপরীত্য সৃষ্টি হলেও মেরু অঞ্চলের বৈপরীত্য স্তর অনেক উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
(c) ভূপৃষ্ঠের পার্থিব বিকিরণ শুষ্ক বায়ুকে বিশেষ একটা শোষণ করতে পারে না। তাই ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু এর ওপরের স্তরের বায়ু অপেক্ষা অধিক মাত্রায় শীতল হয়ে পড়ে। ফলে বায়ুমণ্ডলের এই অবস্থায় উন্নতার বৈপরীত্য ঘটে। ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের শীত ঋতুতে রাত্রিকালীন উম্নতার বৈপরীত্য লক্ষ করা যায় কিন্তু দিনের বেলায় এটি অন্তর্হিত হয়। এই ধরনের উন্নতার বৈপরীত্যের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে নানা ধরনের জলবায়ুগত দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। শিল্প শহরগুলিতে এই ধরনের সমস্যা সচরাচর লক্ষ করা যায়।
(ii) অস্থিতিশীল বা সঞ্চলনজাত উদ্বৃতার বৈপরীত্য (Advection inversion):
শীতল ভূমিভাগের ওপর দিয়ে উন্ন পুরু বায়ুস্তরের অনুভূমিকভাবে প্রবাহের ফলে উয়তার যে বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়, তাকে অনুভূমিক সঞ্চলনজাত বা অ্যাডভেকশন বৈপরীত্য বলে। পরিবহণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু শীতল হয়ে পড়লে এবং এর উপরিভাগ দিয়ে উদ্বু বায়ুর অনুভূমিক সঞ্চলনের ফলে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় অ্যাডভেকশন বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়।
• সৃষ্টির কারণ: যে সকল পরিস্থিতিতে এইরূপ বৈপরীত্য সৃষ্টি হয় সেগুলি হল-
(a) শীতল জলপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে উন্ন বায়ু প্রবাহিত হলে,
(b) শীতল স্থলভাগ বা তুষারাবৃত ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে উন্ন বায়ু প্রবাহিত হলে এবং
(c) গ্রীষ্মকালে সমুদ্রপৃষ্ঠ স্থলভাগের তুলনায় অধিক মাত্রায় শীতল থাকে। তাই, স্থলভাগের ওপর দিয়ে শীতল সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হলে উয়তার বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ: উত্তর ইউরেশিয়ার নিম্নভূমি ও উত্তর কানাডার তুষারাবৃত ভূভাগের ওপর দিয়ে উন্ন-আর্দ্র সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হওয়ায় বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে উন্নতার যে বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়, তা অ্যাডভেকশন পদ্ধতিতেই সৃষ্টি হয়।
[2] ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলীয় উয়তার বৈপরীত্য (Upper Air Temperature Inversion):
ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্বে অবস্থান ও উৎপত্তির প্রকৃতি অনুযায়ী উয়তার বৈপরীত্যকে প্রধান তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(i) উর্ধ্বাকাশে সঞ্চলনহীন উদ্ভুতার বৈপরীত্য (Upper Air Non-advection Temperature Inversion):
বায়ুর সঞ্চলন ছাড়াই ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে উন্নতার বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন স্তরের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা বৃদ্ধি পায়। বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উয়তার এরূপ বৃদ্ধিকে বায়ুর ঊর্ধ্বমণ্ডলীয় উন্নতার বৈপরীত্য বলে। ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি এই স্তরে শোষিত হয় বলেই বায়ুমণ্ডলের এই অংশে উন্নতা বৃদ্ধি পায়।
মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে থার্মোস্ফিয়ার ও এক্সোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের উয়তা বৃদ্ধি পায়। বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে পারমাণবিক নাইট্রোজেন ও আণবিক অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দ্বারা সূর্য থেকে আসা রঞ্জন, গামা ও অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হয় বলে বায়ুমণ্ডলের এই অংশে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা বৃদ্ধি পায়।
(ii) বাস্তুর অবনমনজনিত উন্নতার বৈপরীত্য (Subsidance inversion of Air Temperature):
ভূপৃষ্ঠের কিছুটা ওপরে বায়ুস্রোতের অবনমনের ফলে উয়তার বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়। ওপরের শীতল ও ভারী বায়ু নিচের দিকে নামার সময় সঙ্কুচিত হলে তা অ্যাডিয়াবেটিক পদ্ধতিতে প্রতি 1 কিলোমিটার বায়ুর অবনমনের ফলে 10° সেঃ হারে বায়ুর উয়তা বাড়ে। একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত এরূপ শীতল বায়ুপুঞ্জের অবনমন ঘটে। এর নিচে বায়ু অবনমিত না হয়ে অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত হয়। ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্ব শীতল বায়ুস্তরের ওপর অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত এই ধরনের উষুবায়ুর অবস্থানের ফলে উর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে বায়ুর অবনমনজনিত উন্নতার বৈপরীত্য সৃষ্ট হয়। এরূপ উম্নতার বৈপরীত্য স্তরের নিচে বায়ুর উল্লম্ব সঞ্চলন থাকে না। অর্থাৎ, ওপরের স্তরের বায়ুর অবনমন ঘটে না। বায়ুর উচ্চচাপীয় অঞ্চলে এই ধরনের উম্নতার বৈপরীত্য প্রায়ই ঘটে থাকে। এরূপ অঞ্চলে রাতের বেলায় মাঝে মাঝে 2টি বৈপরীত্য স্তরের সৃষ্টি হয়। ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন নিচের স্তরে বিকিরণজনিত উন্নতার বৈপরীত্য এবং ঊর্ধ্ব বায়ুর স্তরে বায়ুর অবনমনজনিত উন্নতার বৈপরীত্য অবস্থান করে।
বায়ুর অবনমনজনিত উষ্ণতার বৈপরীত্য |
উদাহরণ: 30° উত্তর অক্ষরেখার নিকটবর্তী আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর আজোর ও প্রশান্তমহাসাগরীয় উচ্চচাপ অবস্থান করায় এখানে প্রতীপ ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। এই প্রতীপ ঘূর্ণবাত বলয়গুলির পূর্ব প্রান্তে বায়ুর অবনমন ঘটে। ফলে প্রায় 500-1000 মিটার উচ্চতার মধ্যে শক্তিশালী উয়তার বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়। বায়ুর এরূপ স্থিতিশীল অবস্থায় শিল্পকেন্দ্র ও যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত পদার্থগুলি পরিবেশগত দুর্যোগের সৃষ্টি করে।
( iii) ঝঞ্ঝা ও পরিচলন স্রোতজনিত বৈপরীত্য (Turbulance and Convective Inversion): ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এই ধরনের বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়। ঝঞ্ঝা ও পরিচলন স্রোত এরূপ উন্নতার বৈপরীত্য সৃষ্টির জন্য দায়ী। ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে ঘূর্ণীর সৃষ্টি হয়। ফলে নিচের স্তরের বায়ু উচ্চ স্তরে এবং উচ্চ স্তরের বায়ু নিম্নস্তরে স্থানান্তরিত হয়। ভূপৃষ্ঠের ওপর পরিচলন স্রোতের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধ্বস্তর ও নিম্নস্তরের মধ্যে বায়ুর বিনিময় ঘটে। এর ফলে বায়ুর মিশ্রণ ঘটে ও ঝঞ্ঝা স্তরের সৃষ্টি হয়। তবে একটা নির্দিষ্ট উচ্চতার মধ্যে এটি সংঘটিত হয়। যে উচ্চতার ঊর্ধ্বে বায়ুর পরিচলন ঘটে না, সেখানেই বায়ুর পরিচলন স্রোতজনিত উয়তার বৈপরীত্য স্তরের সৃষ্টি হয়। উল্লম্ব মিশ্রণ প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বমুখী বায়ু অ্যাডিয়াবেটিক প্রক্রিয়ায় শীতল হয়। অনুরূপভাবে, নিম্নমুখী বায়ু অ্যাডিয়াবেটিক পদ্ধতিতে উত্তপ্ত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে বায়ুমণ্ডলে এই ধরনের মিশ্রণ প্রক্রিয়া চলতে থাকার ফলে ঝঞ্ঝা স্তরের বায়ু পূর্বের তুলনায় শীতল হয় এবং ঝঞ্ঝা স্তরের নিচের বায়ু পূর্বের তুলনায় উয় হয়। ঝঞ্ঝা স্তরের ওপরের বায়ুর তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে এবং বৈপরীত্য উন্নতা স্তরের বিকাশ ঘটে।
এই বৈপরীত্য স্তরে স্ট্যাটাস বা স্ট্র্যাটো-কিউমুলাস মেঘের সৃষ্টি হয়। ভূমির তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কযুক্ত গোলযোগের প্রভাবে কিউমুলাস বা কিউমুলোনিম্বাস মেঘের সৃষ্টি হয়।
বৈপরীত্য স্তরের নিচের স্তরে বা অধিক উচ্চতায় ঝঞ্ঝা বিকাশ লাভ করতে পারে। ধোঁয়া, ধুলিকণা ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ বৈপরীত্য স্তর পর্যন্ত পরিবাহিত হয় এবং অনুভূমিকভাবে এই স্তরের মধ্যেই প্রসারিত হয়। তাই এই অবস্থায় ধোঁয়াশার রেখা সৃষ্টি হয়। কিউমুলোনিম্বাস মেঘের ওপরের অংশ নেহাই (arvil) আকৃতির হওয়ার কারণ হিসেবে উন্নতার বৈপরীত্য স্তরের উপস্থিতিকেই সূচিত করে।
[3] সীমান্ত সম্পর্কিত উন্নতার বৈপরীত্য (Frontal Inversion of temperature) :
সীমান্ত পৃষ্ঠের ওপর স্বাভাবিক তাপবিযুক্তি হারের বিপরীত অবস্থাকে সীমান্ত সম্পর্কিত উন্নতার বৈপরীত্য বলে। যখন বিপরীতধর্মী বায়ুপুঞ্জ পরস্পর সম্মিলিত হয়, তখন সীমান্ততল বরাবর উন্মু বায়ু ঊর্ধ্বমুখী হয় ও শীতল বায়ুর
ওপর অবস্থান করে। কোরিওলিস বলের প্রভাবে দুই ভিন্নধর্মী বায়ুপুঞ্জের সীমান্তীয় বলয় অনুভূমিকভাবে প্রসার লাভ করতে পারে না। এই সীমান্ত বলয়ই বৈপরীত্য স্তরের রূপ নেয়
সীমান্ত উষ্ণতার বৈপরীত্য |