ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Cyclone) :
1. কেন্দ্রে গভীর নিম্নচাপ : ঘূর্ণবাতের সমগ্র এলাকায় বায়ুর চাপ খুবই কম থাকে। বিশেষ করে ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে চাপ সর্বনিম্ন হয়। ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে এই চাপ 850-900 মিলিবার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
2. ঘূর্ণবাতের চক্ষু : ঘূর্ণবাতের মাঝখানে একটি প্রায় গোলাকার কেন্দ্র থাকে, একে ঘূর্ণবাতের চক্ষু (Eye of cyclone) বলে। এই চক্ষুতে শান্তভাব বিরাজ করে।
3. চাপের পার্থক্য: ঘূর্ণবাতের বহির্সীমানা ও কেন্দ্রের মধ্যে তাপের পার্থক্য যেমন তীব্র, তেমনি চাপের পার্থক্যও প্রবল।
একটি নিম্নচাপ কেন্দ্র |
4. বায়ুপ্রবাহের দিক : বায়ু নিম্নচাপ কক্ষের চারদিকে আবর্তিত হতে হতে প্রবাহিত হয়। এটি উত্তর গোলার্ধে বামাবর্তে ও দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে প্রবাহিত হয়।
5. বায়ুর গতিবেগ : বায়ুপ্রবাহের গতি ঘণ্টায় 20 কিমি-র কম হয় না এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে গতিবেগ 400 কিমি পর্যন্ত হতে পারে।
6. শীর্ষের উপস্থিতি : প্রত্যেক ঘূর্ণবাতে ঘূর্ণির (Vor-tex) একটি শীর্ষ (Apex) থাকে। এই শীর্ষ ঊর্ধ্বস্তরে জেট বায়ুস্রোতের সঙ্গে যুক্ত হলে ঘূর্ণবাতের গতিপথ ওই বায়ুস্রোতের পথকে অনুসরণ করে। এ ছাড়া বায়ুর চাপবলয়ের স্থানান্তরের সঙ্গে সঙ্গেও এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়।
7. স্থায়িত্ব : ঘূর্ণবাত ক্ষণস্থায়ী বা স্বল্পস্থায়ী হয় এবং কোনো স্থানের ওপর স্থির থাকতে পারে কিংবা চলমান হতে পারে।
৪. কেন্দ্রমুখী বায়ুপ্রবাহ : ঘূর্ণবাতে চারদিক থেকে বায়ু কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়। অর্থাৎ, কেন্দ্রমুখী হয়।
9. শক্তির উৎস : লীনতাপ ও জলীয় বাষ্প থেকে ঘূর্ণবাত তার শক্তিলাভ করে। এই শক্তি গতিশক্তিতে (Kinetic energy) পরিণত হয় ও ঘূর্ণবাতকে সক্রিয় রাখে। এজন্য ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সমুদ্রের ওপর উৎপন্ন হয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।
10. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া: ঘূর্ণবাত যতক্ষণ অবস্থান করে, ততক্ষণ আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ থাকে। ঘূর্ণবাত সরে গেলে কিংবা দুর্বল হয়ে পড়লে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায় এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।