কোপেনকৃত বিশ্ব জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ (Koppen's Classification of world climate):
বিশ্ব জলবায়ুকে প্রথম যুক্তিপূর্ণ মাপকাঠির ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাজন করার ক্ষেত্রে জার্মান উদ্ভিদবিদ ও আবহবিদ ভ্লাদিমার কোপেন (Wladimar Köppen)-এর অবদান আধুনিক জলবায়ুবিদ্যাকে এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে উত্তীর্ণ করেছে। কোপেন প্রথম জীবনে একজন উদ্ভিদবিদ রূপেই পরিবেশের চর্চা শুরু করেন। পরবর্তীকালে স্বাভাবিক উদ্ভিদের আঞ্চলিক বণ্টন নিয়ে গবেষণার সময় তিনি প্রত্যক্ষ করেন যে জলবায়ু তথা আবহাওয়ার উপাদানগুলির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক উদ্ভিদের চরিত্রও বদলাতে থাকে।
ভ্লাদিমির কোপেন
এমনকি একই প্রকারের স্বাভাবিক উদ্ভিদের আঞ্চলিক বণ্টনের পরিধি কঠোরভাবে জলবায়ুকে অনুসরণ করে। এই উপলব্ধি থেকে কোপেন জলবায়ু নিয়ন্ত্রণকারী উপাদানগুলির আঞ্চলিক বণ্টনের ওপর গুরুত্ব দিতে শুরু করেন এবং 1900 সালে প্রথম বিশ্ব জলবায়ুর পূর্ণাঙ্গ শ্রেণিবিভাজন করেন। 1868 সালে তিনি প্রথম পৃথিবীর জলবায়ু শ্রেণিবিভাজন সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর তাঁর কাজ একটি পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তারপর 1870-এ লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Leipzig) প্রকাশিত হয় তাঁর গবেষণার কাজ (doctoral dissertation), এবং লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর গবেষণালব্ধ প্রতিবেদনগুলি বিশ্ব জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজন তথা জলবায়ুবিদ্যার এক অমূল্য সম্পদ। কোপেন 1940 সাল পর্যন্ত অর্থাৎ তাঁর মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্ব জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজনকে পরিমার্জন করে ক্রমাগত উন্নত করে তোলার প্রচেষ্টা করে গেছেন।