welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ঘনীভবনের প্রকারভেদ (Forms of Condensation)

ঘনীভবনের প্রকারভেদ (Forms of Condensation):


বায়ু শিশিরাঙ্ক তাপমাত্রায় পৌঁছালে এবং পর্যাপ্ত জলাকর্ষী কণার উপস্থিতি থাকলেই যে-কোনো স্থানে ঘনীভবন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে পড়ে। তাই বায়ুমণ্ডলে স্থানভেদে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ঘনীভূত জলকণা বিভিন্ন রূপে লক্ষ করা যায়। ঘনীভবনকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন-


(ক) ভূপৃষ্ঠের সন্নিকটে ঘনীভবন (Condensation near the earth surface) এবং (খ) উর্ধ্বাকাশে ঘনীভবন (Condensation aloft)।


 ভূপৃষ্ঠের সন্নিকটে ঘনীভবন (Condensation near the earth surface):


ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুর উয়তা শিশিরাঙ্ক তাপমাত্রায় নেমে এলে ঘনীভবন শর্ হয়। ফলে শিশির (Dew), তুহিন (Frost), কুয়াশা (Fog), কুদ্ধাটিকা (Mist) ইত্যাদির সৃষ্টি হয়।


1. শিশির (Dew): 

ভূপৃষ্ঠে কোনো বস্তুর ওপর ঘনীভূত অতি ক্ষুদ্র জলকণাকে শিশির (Dew) বলা হয়। রাতের বেলায় ভূপৃষ্ঠ তাপবিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়লে তার সংস্পর্শে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়ে ঘাস, পাতা, শৈবাল প্রভৃতির ওপর জলবিন্দুর আকারে সঞ্চিত হয়। মেঘমুক্ত রাতে অধিক পরিমাণ শিশির জমে। কারণ রাতে মেঘমুক্ত অবস্থা তৈরি হলে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত দীর্ঘ তরঙ্গরূপে তাপবিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়ে এবং সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের উন্নতা কমিয়ে দেয়। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে ০° সেঃ-এর নীচে নেমে এলে শিশিরগুলি জমাট বেঁধে বরফকণায় পরিণত হয়। একে হিমায়িত শিশির (Frozen Dew) বলে।


2. তুহিন (Frost):

 শীতপ্রধান দেশে কিংবা উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেলে শিশিরাঙ্ক তাপমাত্রাও হিমাঙ্কের নীচে অবস্থান করে। এই অবস্থায় জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত না হয়ে সরাসরি বরফকণায় পরিণত হয়। ফলে ভূপৃষ্ঠের ওপর অবস্থিত ঘাস, পাতায় শিশিরের পরিবর্তে বরফকুঁচি জমে। একে তুহিন (Frost) বলে।


3. কুয়াশা (Fog): 

ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপবিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়লে এবং সংলগ্ন বায়ুস্তর শীতল হয়ে শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে এলে ভূপৃষ্ঠের নিকট জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং অজস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণার সৃষ্টি করে এবং জলাকর্ষী কণাকে আশ্রয় করে বায়ুতে ভেসে বেড়ায় যা বায়ুকে অস্বচ্ছ করে তোলে এবং দৃশ্যমানতা কমিয়ে দেয়, তাকেই কুয়াশা (Fog) বলে। Byers-এর মতে, ভূপৃষ্ঠের নিকটস্থ সেই ঘন জলপুঞ্জকেই কুয়াশা বলা হয় যার দ্বারা অনুভূমিক দৃশ্যমানতা হ্রাস পেয়ে 1 কিমিরও কম হয়ে থাকে। কুয়াশার প্রভাবে নৌ চলাচল, বিমান ও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।


4. কুজ্বাটিকা (Mist):

 জলভাগের ওপর (নদী, হ্রদ, জলাভূমি) শীতকালে সন্ধ্যার দিকে বায়ুমধ্যস্থ জলীয় বাষ্পের ঘনীভবনের ফলে কুয়াশার মতো দেখতে হালকা অস্বচ্ছ আবরণ সৃষ্টি হয়। একেই কুজ্বাটিকা বলে। তবে এর দৃশ্যমানতা কুয়াশার তুলনায় বেশি থাকে।

উর্ধ্বাকাশে ঘনীভবন (Condensation aloft)

"Condensation aloft" সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায় যেখানে বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প উচ্চতর উচ্চতায় তরল জল বা বরফের কণাতে ঘনীভূত হয়। এটি সাধারণত ঘটে যখন আর্দ্র বায়ু বৃদ্ধি পায় এবং তার শিশির বিন্দুতে শীতল হয়, যে তাপমাত্রায় বায়ু পরিপূর্ণ হয় এবং জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হতে শুরু করে। মেঘ গঠন এবং বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


যখন বায়ুর ভর বৃদ্ধি পায়, তারা উচ্চ উচ্চতায় নিম্নচাপের কারণে প্রসারিত হয় এবং শীতল হয়। যদি বাতাস তার শিশির বিন্দুতে ঠান্ডা হয়, তাহলে ঘনীভূত হয়, যা মেঘের গঠনের দিকে পরিচালিত করে। এটি বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতিতে ঘটতে পারে, যেমন:


পরিবাহী উত্তোলন :

 পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে উত্তাপের কারণে উষ্ণ বায়ু বৃদ্ধি পায়।

অরোগ্রাফিক উত্তোলন : 

বায়ু পাহাড় বা অন্যান্য টপোগ্রাফিক বৈশিষ্ট্যের উপর আরোহণ করতে বাধ্য হয়।

সামনের উত্তোলন :

 আবহাওয়ার ফ্রন্টে ঠান্ডা বাতাসের উপরে উষ্ণ বায়ু উত্তোলন করা হয়।

ঘনীভূত উচ্চতা হল আবহাওয়ার ধরণ এবং জলচক্রের একটি মূল কারণ, যা বৃষ্টিপাত, মেঘের গতিশীলতা এবং বায়ুমণ্ডলীয় স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে।

Middle post ad 01