welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

পরিবহন ব্যয় (Transport cost)

 পরিবহন ব্যয় (Transport cost)

■ পরিবহন ব্যয় ও সরবরাহ ব্যয়:

 মাল পরিবহনের জন্য যানবাহনের ভাড়া বাবদ প্রত্যক্ষ খরচকে "পরিবহন ব্যয়" বা "ফ্রেট কস্ট" (freight cost) বা "ট্রান্সপোর্ট কস্ট" (transport cost) বলে। তবে শুধুমাত্র যানবাহন ভাড়া করলেই মালপত্র স্থানান্তর করা যায় না। কুলিভাড়া, প্যাকিং খরচ (packing), বিমা, নিয়মিত শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদি খাতেও পরিবহন বাবদ আরও কিছু খরচ হয়। সম্পদশাস্ত্রের পরিভাষায় পরিবহন ব্যয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলে, মোট পরিবহন ব্যয়কে সরবরাহ ব্যয় বা ট্রান্সফার কস্ট (transfer cost) বলে [তথ্যসূত্র: Smith, D.M., (1971). Industrial Location; An Economic Geographical Analysis]।

বিভিন্ন ধরনের পরিবহন ব্যয়-কাঠামো (Types of structure of freight rates): 

পরিবহন ব্যয় কাঠামো তিন প্রকার, যেমন (1) দূরত্বের আনুপাতিক পরিবহন ব্যয় (mileage rate বা line-haul cost); (2) আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয় (blanket rate) এবং (3) দূরত্ব-নিরপেক্ষ পরিবহন ব্যয় (postage stamp rate)।

(1) দূরত্বের আনুপাতিক পরিবহন ব্যয়ঃ 

পরিবহন ব্যয় যেখানে দূরত্বের অনুপাতে বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ দূরত্ব ও পরিবহন খরচ যেখানে সমানুপাতিক সেই ব্যয়, দূরত্বের আনুপাতিক পরিবহন ব্যয় বা "লাইন-হল কস্ট" (line-haul cost) বা "মাইলেজ রেট" (mileage rate) নামে পরিচিত (চিত্র 1.8)। এই জাতীয় পরিবহন ব্যয় কাঠামো শ্রমশিল্পকে যে-কোনো জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠতে দেয় না।

(2) আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয়ঃ

 পরিবহন ব্যয়-কাঠামো যেখানে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সর্বত্র সমান, যেখানে ওই অঞ্চলের সীমানার মধ্যে পরিবহন ব্যয়ের উপর দূরত্বের কোনো প্রভাব নেই, সে-জাতীয় পরিবহন খরচকে "আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয় বা "ব্লাংকেট রেট" (blanket rate) বলে । অর্থাৎ কম্বল যতদূর ঢাকা দেওয়া থাকে, তারমধ্যে সব জায়গা যেমন সমানভাবে গরম হয় কিন্তু কম্বলের বাইরের অংশে গরমের মাত্রা বদলে যায়, ঠিক তেমনই কোনো বিশেষ অঞ্চলে পরিবহন খরচ যখন যে- দানো জায়গাতেই সমান থাকে, সম্পদশাস্ত্রের পরিভাষায় তাকে আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয়-কাঠামো বলে। শিল্পের অবস্থানের উপর এই পরিবহন ব্যয়-কাঠামোর প্রভাব যথেষ্ট। কারণ পরিবহন ব্যয়ের উপর নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে দূরত্বের কোনো প্রভাব না থাকায়, শিল্প ওই প্রদত্ত অঞ্চলের মধ্যে যে-কোনো জায়গায় গড়ে উঠতে পারে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, কোনো অঞ্চলে শিল্পায়নের প্রভাবকে সম্প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে সরকার বা আঞ্চলিক প্রশাসন পরিবহন ক্ষেত্রে ভরতুকি দিয়ে, এ-ধরনের পরিবহন ব্যয়-কাঠামো গড়ে তুলতে পারে।

(3) দূরত্ব-নিরপেক্ষ পরিবহন ব্যয়ঃ

 দূরত্ব-নিরপেক্ষ পরিবহন ব্যয় হল আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয়-কাঠামোর সম্প্রসারিত রূপ। এক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয় কোনো দেশের সর্বত্র বা কোনো বিশাল অঞ্চল জুড়ে সব জায়গায় সমান । এ-ধরনের পরিবহন ব্যয়-কাঠামোকে ডাক খরচের (postage stamp) সঙ্গে তুলনা করা হয়। কারণ কোনো দেশের মধ্যে দূরত্ব। অনুসারে ডাক খরচের কোনো তারতম্য হয় না। অর্থাৎ কলকাতা ও কাশ্মীর বা কলকাতা ও কৃষ্ণনগরের মধ্যে পোস্টকার্ড বা ইনল্যান্ড লেটার কার্ড-এর খরচ সমান। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, আঞ্চলিক সমপরিবহন ব্যয়-কাঠামোর মাধ্যমে যেমন কোনো ছোটো অঞ্চলের মধ্যে শিল্পক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করার সুযোগ পাওয়া যায়, তেমনি সমগ্র দেশ বা কোনো বিরাট অঞ্চলের মধ্যে শিল্পায়নের গতিকে বাড়াতে হলে, অনেক সময় দূরত্ব-নিরপেক্ষ পরিবহন ব্যয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়ে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01