শক্তি, তাপমাত্রা ও তাপ (Energy, Temperature and Heat) :
কাজ করার সামর্থ্যকেই শক্তি বলে। কাজ (work) বলতে আবার বস্তুর ওপর বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অর্থাৎ, ধাক্কা দিয়ে, টেনে বা তুলে স্বস্থান থেকে সরানোকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি ইটকে যদি ওপরে তুলতে হয় তাহলে অবশ্যই অভিকর্ষজ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। ইটটিকে যতটা উঁচুতে তোলা হবে ততটা পরিমাণ কার্যের ক্ষমতা বাড়বে। কার্য সম্পাদনের জন্যই প্রয়োজন শক্তির।
সুতরাং শক্তি হল- E = P×S যেখানে, E = শক্তি; P = বল; S = বস্তুর সরণ।
শক্তি দু-প্রকার - স্থৈতিক শক্তি ও গতিশক্তি।
1. স্থৈতিক বা স্থিতি শক্তি (Potential Energy):
কোনো বস্তুতে সঞ্চিত মোট শক্তির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় বস্তুটির কার্য করার সামর্থ্যের ওপর। একটি বাঁধের পিছনে নির্মিত জলাধার তার অবস্থানের গুণেই কার্য করার সামর্থ্য লাভ করে। এই ধরনের শক্তি বস্তুর অবস্থান বা আকৃতির জন্য অর্জিত হয়। একেই স্থৈতিক শক্তি বলে। স্থৈতিক শক্তি বস্তুর ভর, অভিকর্ষজ বল ও উচ্চতার সম্মিলিত ফল। সুতরাং কোনো বস্তুর স্থৈতিক শক্তি হল-
PE=m*g*h যেখানে, 'PE' স্থৈতিক শক্তি;
'm' বস্তুর ভর;
'g' বস্তুর ওপর প্রযুক্ত অভিকর্ষজ বল;
'h' ভূমি থেকে বস্তুর উচ্চতা
সুতরাং এটি স্পষ্ট করে বলা যেতে পারে যে, ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন একখণ্ড বায়ুর তুলনায় ঊর্ধ্বাকাশে ভাসমান সমপরিমাণ বায়ুর স্থৈতিক শক্তির পরিমাণ অনেক বেশি হয়।
স্থিতিশক্তি দুই প্রকার- 1. অভিকর্ষীয় স্থিতিশক্তি এবং 2. স্থিতিস্থাপক স্থিতিশক্তি। জলবায়ুবিদ্যা আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হল অভিকর্ষীয় স্থিতিশক্তি।
2. গতিশক্তি (Kinetie Energy):
কোনো গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য যে শক্তি অর্জন করে তাকে গতিশক্তি বলে। সুতরাং কোনো বস্তুর ভর 'm' এবং বেগ 'v' হলে মোট গতিশক্তির (KE) পরিমাণ হবে = 1/2 mv².
• গতিশক্তির সূত্র নির্ধারণ:
শক্তি যদি বস্তুর ওপর প্রযুক্ত বল ও সরণের সম্মিলিত ফল হয়, তবে রৈখিক গতিশক্তির ক্ষেত্রে বল (P) নিউটনের দ্বিতীয় সুত্রানুযায়ী P = mf হবে, যেখানে f = v2 /2s
সুতরাং
KE = P×S = mxfxs v2 = m x 1 2sxs=2xm v2
প্রকৃতপক্ষে স্থৈতিক শক্তিই গতিশক্তিতে পরিণত হয়। বাঁধের পিছনে জলের উপস্থিতির কারণে যেমন জলাধার স্থৈতিক শক্তি লাভ করে তেমনি বাঁধ অপসারিত হলে ওই স্থৈতিক শক্তিই গতিশক্তিতে পরিণত হয়ে জলকে গতিশীল করে তোলে।