welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

মাটির উর্বরতার শ্রেণীবিভাগ [Classification of soil fertility]

 মাটির উর্বরতার শ্রেণীবিভাগ [Classification of soil fertility]

মাটির উর্বরতা দুই ধরনের হয়। যথা,-

(ক) সহজাত বা অন্তর্নিহিত উর্বরতা- 

কোন উদ্ভিদখাদ্য বাইরে থেকে প্রয়োগ না করলে স্বাভাবিকভাবে মাটির উর্বরতা বজায় থাকে, একে সহজাত উর্বরতা বলে। বিভিন্ন খাদ্যমৌয়ে মধ্যে ফসলের বৃদ্ধি ও উচ্চ ফলনের জন্য N, P ও K একান্ত দরকার। সাধারণভা আমাদের দেশের বেশির ভাগ মাটিতে এই তিনটি খাদ্যমৌলের অভাব আছে। সহজাত উর্বরতার একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে।


(খ) অর্জিত উর্বরতা-

জলসেচ, কর্ষণ, বিভিন্ন ধরনের সারের প্রয়োগ প্রভৃতি বিষয়গুলি ভালভাবে সম্পন্ন হবার ফলে মাটির যে উর্বরতার সৃষ্টি হয়, তাকে বলে অর্জিত উর্বরতা সুতরাং বেশি পরিমাণে সার দিলেও ফলন খুব বেশি বাড়ে না। তাই মাটিতে গাছের খাদ্যের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে সার দেওয়া দরকার। সহজাত উর্বরতার মত অর্জিত উর্বরতার ও একটা সীমা আছে।


মাটির উর্বরতা সংরক্ষণ এবং উর্বরতার উন্নতি সাধন-মাটির উর্বরতা বজায় রাখা কৃষকের কাছে একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে হলে মাটি থেকে গাছের খাদ্যমৌলের অপচয় বন্ধ করতে হবে এবং গাছের খাদ্যের পরিমাণ বাড়াতে হবে। মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে এবং বাড়াতে হলে নিচের বিষয়গুলির উপরে নজর দিতে হবে।


(ক) জমিকে ভালভাবে কর্ষণ-মাটিকে শস্য উৎপাদনের উপযুক্ত করতে হলে ভালভাবে কর্ষণ করা দরকার। ভালভাবে চাষ করলে আগাছা ও শস্যাবশেষ মাটিতে চাপা পড়ে জৈব পদার্থে পরিণত হয় এবং মাটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব পরিবর্তন ঘটায়।


(খ) শস্যাবর্তন-প্রতি বছর জমিতে একই ফসল চাষ করলে সেই জমি থেকে খাদ্য উপাদানগুলি নিঃশেষিত হয় এবং মাটি অনুর্বর হয়ে ওঠে। আলাদা আলাদা শস্যের জন্য বিভিন্ন খাদ্য উপাদান প্রয়োজন। ধান চাষের আগে জমিতে সবুজ সারের গাছপালা চাষ করলে মাটির উর্বরতা বাড়ে। আবার ধান বা গমের মত দানাশস্যের পর ডালজাতীয় নাইট্রোজেন বৃদ্ধিশীল শস্য চাষ করা যেতে পারে। এইভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন শস্যের চাষ করলে জমির উর্বরতা বাড়ে।


(গ) জমির উপযুক্ত ব্যবহার-জমির গুণ ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে শস্য চাষ করতে হবে। যেমন, বেলে মাটিতে আমন ধান চাষ করলে তা ভাল হয় না। আবার ক্ষয় মাটির উর্বরতা কমায়। ফলে উর্বরতা বজায় রাখার জন্য মাটির ক্ষয় বন্ধ করতে হবে। ঢালু জমিতে ঢালের আড়াআড়ি সারিবদ্ধভাবে এবং পাহাড়ী ঢালে ধাপ কেটে চাষ করতে হবে। তাছাড়া যেসব ফসলের জন্য বেশি জলসেচের দরকার, ঢালু জমিতে সেইসব ফসল চাষ করা যাবে না।


(ঘ) সবুজ সার তৈরির শস্য চাষ-সিম্বিগোত্রীয় কলাই, সিম, বারসীম, ধঞ্চে, শন প্রভৃতি শস্য এবং অসিম্বিগোত্রীয় ভুট্টা, যব, জোয়ার, বাজরা প্রভৃতি শস্য চাষ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে মাটির উর্বরতা বাড়ে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01