গবেষণা পদ্ধতির প্রকারভেদ (Types of Research Method)
গবেষণা পদ্ধতির প্রকারভেদ নানাভাবে করা যায়।
গবেষণা পদ্ধতির প্রকারভেদ নিম্নরূপ -
১. বিশুদ্ধ গবেষণা পদ্ধতি
২. বর্ণনামূলক গবেষণা পদ্ধতি
৩. অভিজ্ঞানমূলক গবেষণা পদ্ধতি
৪. প্রায়গিক গবেষণা পদ্ধতি
৫. কর্মপন্থা মূলক গবেষনা-পদ্ধতি
৬. কর্মরূপায়ণ সংক্রান্ত গবেষণা পদ্ধতি ।
এছাড়া, আরেকভাবে গবেষণা পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ করা যায়। এটি হলো
১. মাত্রিকতা নির্ভর গবেষণা (Quantitative research) ২. গুননির্ভর গবেষণা (Qualitative research)।
১. বিশুদ্ধ বা মৌলিক গবেষণা (Pure or fundamental or basic research) :
বিশুদ্ধ গবেষণা বস্তুত মৌলিক বা তাত্ত্বিক গবেষণার পর্যায়ে পড়ে। এর উদ্দেশ্য বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান-এর উন্মেষ ও প্রসার এবং নতুন নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবন। বিজ্ঞানীগণ সর্বদাই এই সকল নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে চলেন এবং বিশেষভাবে অধ্যয়ন করেন, যার ফলশ্রুতিতে নতুন নতুন ধারণা বা চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে, যা বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানের পরিধির বিস্তার ঘটায়। মানুষ জ্ঞানের অনুসন্ধিৎসা থেকেই গবেষণায় উদ্যোগী হন।
ভূমিরূপের বিবর্তন বিষয়ে জ্ঞানের আগ্রহ থেকেই ডেভিস (Davis), পেঙ্ক (Penck), কিং (King) প্রমুখ ভূ-বিজ্ঞানীগণ মৌলিক গবেষণায় ব্রতী হন এবং উক্ত প্রাকৃতিক নিয়ম নীতির অনুসন্ধান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের ধারণার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। অনুরূপভাবে, সামাজিক ভূগোলের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন, প্রব্রজন, জনবিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে ভৌগোলিক মতবাদ বা তত্ত্ব বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়। র্যাভেনস্টাইন (Ravenstine), লী (Lee) প্রমুখকৃত প্রব্ৰজন তত্ত্ব; জনস্টন (Jhonston), বোগ (Bogoue) প্রমুখকৃত জনবিবর্তন তত্ত্ব ভৌগোলিকদের মৌলিক গবেষণা মূলক চিন্তাভাবনার পরিচয় দেয়। প্রকৃতি ও সমাজে কী নূতন, কী অনাবিস্কৃত, কেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের জীবনধারা ও কর্ম প্রণালীতে এত পার্থক্য, কোন কোন পরিবেশে কীভাবে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির অভিযোজন ঘটে, তার মৌলিক গবেষণা অনেক আগ্রহজনক তথ্যের সন্ধান দেয়।
২. বর্ণনামূলক গবেষণা (Descriptive research) :
এরূপ গবেষণায় কোন বিষয়ের স্থান, কাল, পরিস্থিতি অনুযায়ী সুসংহত, প্রণালীবদ্ধ প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তথ্যাদি বর্ণনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়। এইভাবে কোনো সমস্যা, কোনো পরিস্থিতি, কোনো কার্যক্রম বা কোনো ঘটনাবলীর বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। যেমন, কোনো শহরে জাতিগতভাবে বিচ্ছিন্ন ও নিজেরা সঙ্ঘবদ্ধ কোনো জনগোষ্ঠী কী অবস্থায় রয়েছে, কী ধরনের বিচ্ছিন্নতাবোধ বা কী ধরনের সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হন তারা, এধরণের বিষয়ে বর্ণনামূলক গবেষণা প্রযুক্ত হয়। যেমন, সমাজে নারীদের অবস্থান বর্ণনা, গৃহে অশান্তি জনিত কারন ও সন্তানদের উপর তার প্রভাব-এর কার্যকারণ সম্পর্ক; বিবাহে যৌতুক প্রদানের কুফল ও সংশ্লিষ্ট
ঘটনাবলী ইত্যাদি বর্ণনামূলক গবেষণায় বিবেচিত হতে পারে। এরূপ গবেষণায় বিবেচ্য হয় সমস্যাদির বর্তমান অবস্থা নিরূপণ এবং তা সমাধানের উপায় বর্ণনা।
৩. অভিজ্ঞানমূলক গবেষণা (Exploratory research) :
এরূপ গবেষনা পদ্ধতিতে নূতন নূতন ধারণা আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হয়। যে পরিবেশে অধিকাংশই অজানা সেই অজানা তথ্যের অনুসন্ধানে অভিযান করা হয়। গবেষকের সৃজনশীলতা সমস্যার অন্তস্থলে প্রবেশে গবেষককে সাহায্য করে। কী ধরণের সৃজনশীল কাজ করলে সমস্যার সমাধান হবে এটি গবেষককে প্রথমেই বুঝতে হয়। সমস্যার গভীরে কী আছে, কীভাবে সমস্যাটি আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে সেটি খুঁজে দেখা হয়। এর প গবেষনায় গবেষক সাধারণ ধারণা নিয়ে অগ্রসর হন এবং এর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেন যা ভবিষ্যৎ গবেষণা বিষয়ে সাহায্য করে। সাধারণত গবেষনার প্রাথমিক পর্যায়ে এরূপ অনুসন্ধানকার্য চালানো হয়।
গবেষণায় পরীক্ষা নিরীক্ষা (experiment)-র গুরুত্ব :
তত্ত্ব ও জ্ঞানের প্রায়োগ কার্যকারিতা নির্ধারণের জন্য বৈজ্ঞানিক গবেষনায় experiment বা পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। এই পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলে পুরানো তথ্য প্রায়োগ, সংশোধন বা বাতিল করা এবং এমনকি নতুন তত্ত্ব, তথ্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৪. প্রায়োগিক গবেষণা (Applied research) :
প্রায়োগিক গবেষণা হলো সেই সকল বিষয়ে গবেষণা যার ব্যবহারিক গুরুত্ব রয়েছে। এটি অনুসন্ধিৎসা, যুক্তিপূর্ণ চিন্তা ভাবনার ফসল। কোন্ নদীর কোন্ অংশে নদী বাঁধ দিলে প্রাকৃতিক পরিবেশে বিপর্যয় না ঘটিয়েও জনমুখী প্রকল্প রূপায়ণ সম্ভব, তা প্রায়োগিক গবেষণার বিষয়। বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রেখে পার্বত্য বনাঞ্চলে কীভাবে যাতায়াতের পথ নির্মাণ করে জনকল্যাণ সাধন করা সম্ভব, তা প্রায়োগিক গবেষণায় গবেষকদের চিন্তার বিষয়। কোন সরকারি প্রকল্প কীভাবে, কোন অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রযুক্ত হল, উক্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠী কীভাবে তাতে সাড়া দেবেন, তাও প্রায়োগিক গবেষণার বিষয়বস্তু। উক্ত গবেষণায় গবেষক খুঁজে বের করতে সচেষ্ট হবেন কীভাবে উক্ত সরকারি প্রকল্প জনগোষ্ঠীর জীবন যাত্রার উন্নতি সাধনে সর্বাত্মক কার্যকরী হবে। উক্ত গবেষকদের গবেষণার ফলাফল প্রকল্প রূপকাররা গ্রহণ করলেন কিনা, সেটি অবশ্য প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নির্ভর।
কোনো অঞ্চলে উন্নয়নমূলক প্রকল্প উপযুক্ত প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক গবেষণা ছাড়া রূপায়নের নেতিবাচক দিক রয়েছে। উপযুক্ত ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষার অভাবে কয়না জলাধার নির্মাণের পর জলাধার বসে গিয়ে মহারাষ্ট্রের কয়না নগরে ভূমিকম্প ঘটেছিল। বাস্তুতন্ত্র এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর উপর কী প্রভাব পড়বে তা যথেষ্ট গবেষণা ছাড়াই কেরালায় ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে কুন্তি পূঝা নদী উপত্যকায় সাইলেন্ট ভ্যালী প্রোজেক্ট গ্রহণ করা হলে জন প্রতিরোধে তা বাতিল করতে হয়। এখানে প্রায়োগিক গবেষণার ফলাফলের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বোঝা যায়।
৫. কর্মপন্থা বা নীতি মূলক গবেষণা ( Policy research) : এরূপ গবেষণা মূলত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুসারে হয়। কোন অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কী ধরনের প্রকল্প গৃহীত হবে, শিক্ষা ক্ষেত্রে কী ধরনের নীতি গৃহীত হবে, ব্যাঙ্কে ঋণদানের নীতিই বা কী হবে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নূতন আরোগ্যবিধি কী হবে, এরূপ বিষয়ে কর্মপন্থা গ্রহণের পূর্বে গবেষণার প্রয়োজন হয়।
উপযুক্ত গবেষণা ছাড়া এরূপ নীতি গ্রহণ বা রুপায়ন উপযুক্ত ফলদায়ক নাও হতে পারে। যেমন, শিক্ষকতার ক্ষেত্রে চাকুরীতে যোগ্যতা হিসাবে বি.এড. ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করার পর বহু অসাধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেশে গড়ে উঠেছে এবং তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ক্লাসে উপস্থিতির নিয়মনীতি না মেনেই ডিগ্রি প্রদান করেন। এতে গরীব অথচ মেধাবী ছাত্ররা মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করতে পারেন না বলে শিক্ষকতার চাকরিতে অনেক ক্ষেত্রেই মেধার সঙ্গে আপোষ করা হয়। বি.এড. ছাড়াও ভালো শিক্ষক যেমন আমরা পেয়েছি, তেমনি বি.এড. সহ অসফল শিক্ষকও দেখা গেছে। কলেজে শিক্ষকতা পেশায় পাবলিকেশনে নম্বর থাকায়, বহু অসাধু পত্রিকাগোষ্ঠী অর্থের বিনিময়ে নিম্নমানের পেপার প্রকাশ করে চাকুরি প্রার্থীদের চাকুরি পেতে সাহায্য করেছে। এখানেও মেধার সঙ্গে অধ্যাপনা বৃত্তিতে আপোষ করা হয়েছে দীর্ঘকাল। তবে বর্তমানে এই দুর্নীতি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (UGC) তৎপর হয়েছেন।
৬. কর্মরূপায়ণ সংক্রান্ত গবেষণা (Action research) :
এরূপ গবেষণায় কোন নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ড নিয়ে, এরূপ কর্মকাণ্ডের উৎকর্ষ সাধনের উদ্দেশ্যে গবেষণা করা হয়। যেমন, স্কুলে ইংরেজি শিক্ষা থাকবে, না মাতৃভাষায় কেবল পড়াশোনা হবে, এই বিষয়ে গবেষণালব্ধ ফলাফল ইংরেজি থাকা বা না থাকার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে। দেখা গেছে, প্রাথমিক স্তরে ইংরেজি তুলে দেওয়ায় এবং মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি পাঠক্রমে শিথিলতার জন্য, পশ্চিমবঙ্গের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সমগ্র ভারতীয় স্তরে চাকুরিক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে। পরবর্তীতে, নতুন রাজ্য সরকারী নীতিতে প্রাথমিক স্তর থেকেই ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তন হয়েছে। পেট্রোল ও ডিজেল চালিত গাড়ি বায়ুদূষণ ঘটায় এবং ইলেকট্রিক গাড়ি পরিবেশ দূষণ রোধে সাহায্য করে। তাই সরকারি নীতি অনুকূল থাকায় বিভিন্ন দেশে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করার দিকে ঝুঁকেছেন।
কোন প্রকল্প রূপায়নের ফলে সার্থকতা ও ব্যর্থতা নিরূপণে এই গবেষনা পদ্ধতির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
এছাড়া, আরেকভাবে গবেষণা পদ্ধতির শ্রেণীবিভাগ করা যায়। এটি হলো
১. মাত্রিকতা নির্ভর গবেষণা (Quantitative research) এবং ২. গুননির্ভর গবেষণা (Qualitative research)।
১. মাত্রিকতা নির্ভর গবেষণা (Quantitative research) :
মাত্রিকতা নির্ভর গবেষণার ভিত্তি হলো যুক্তিবাদী দর্শন যা একটি দৃঢ়, সুগঠিত এবং পূর্ব নির্ধারিত কার্যক্রম অনুসারে অনুসন্ধান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। যুক্তিনির্ভর এই গবেষণায় চলক (Variables)-এর তারতম্যমূলক ব্যবহারকে পরিমাত্রিক (Quantitative) পরিসংখ্যান (Data) রূপে সংগ্রহ করা হয়, প্রচুর সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ করে ব্যবহার
করা হয় এবং পর্যবেক্ষণলব্ধ পরিসংখ্যা বিভিন্ন গাণিতিক পদ্ধতিতে পরিমাপ করার পরই তথ্যাদি উপস্থাপন করা হয়, যে তথ্যাদি হয় নির্ভরযোগ্য, প্রয়োগযোগ্য, বিশ্লেষণধর্মী এবং বিভিন্ন ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। এগুলির সর্বজনগ্রাহ্যতা উল্লেখনীয়।
Empirical Research :
বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার প্রয়োজনে বিচার্য্য বিষয়বস্তু পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপের মধ্যে দিয়ে গবেষণা কার্যে ব্রতি হলে এরূপ গবেষণাকে এম্পেরিক্যাল রিসার্চ বলে। এতে তত্ত্বের সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতার তুলনা করা হয় যাতে সামাজিক ঘটনাসমূহের স্বার্বজনীন ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হয়। উদাহরণ, কোনো নির্দিষ্ট উপজাতি গোষ্ঠীর বয়স ও লিঙ্গভেদে একদল মানুষকে সমীক্ষার উদ্দেশ্যে পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্নাবলীর মাধ্যমে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ নিতে তারা কতটা আগ এহী, বিভিন্ন পরিমাপকের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যা থেকে নির্দিষ্ট জনসংখ্যার আগ্রহী ও অনাগ্রহী আনুপাতিক সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হয়।
২. গুননির্ভর গবেষণা (Qualitative research) :
গুণগত গবেষণা অভিজ্ঞতালব্ধ দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত। অনুসন্ধান এখানে অনেকখানি খোলামেলা, নমনীয় কাঠামোয় রচিত হয়, যা স্থান, কাল ভেদে সহজ পরিবর্তন ও পরিমার্জন যোগ্য এবং পর্যবেক্ষণ সমূহকে মাত্রিকভাবে প্রকাশিত করার চেয়ে এর বৈচিত্র্যময় গুণাবলীর উন্মেষ ঘটাতে গবেষক বেশি আগ্রহী। এখানে গবেষণার কেন্দ্রে যারা আছেন, তাদের মতামত, ধারণা, উপলব্ধি এগুলোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং গবেষকদের এগুলিকে মাত্রিক ভাবে প্রকাশ এর দিকে ঝোঁক বিশেষ থাকেনা।
ফেনোমোনোলোজি (Phenomenology) :
গুণগত গবেষণার উপজীব্য সমীক্ষা যাতে অভিজ্ঞতালব্ধ ঘটনার অনুসন্ধান ও বর্ণনা করা হয় যে ঘটনাসমূহের কোনো তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এতে মানুষের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার স্বরূপ উপলব্ধি ও তার কার্যকরণ নিরূপন করা হয়। এই সমীক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য বাস্তব ঘটনা চিহ্নিত করা এবং এর কার্যকারণের দিকে আলোকপাত করা। এর মূল উপকরণগুলি হলো—
১. গবেষণা প্রশ্নটি প্রস্তুত হবে মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতার কার্যকারণ নির্ণয়ে আগ্রহ থেকে।
২. অংশীদারী ও অ-অংশীদারী পর্যবেক্ষন মাধ্যমে অনুসন্ধানপূর্বক তথ্য সংগ্রহ করে বিচার বিশ্লেষণ করা হবে। এটি বর্ণনামূলক, ব্যাখ্যামূলক তথ্যানুসন্ধান যা জীবনের অভিজ্ঞতা ও বিশেষ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট ঘটনাবলী বুঝতে সাহায্য করে।
তবে ভূগোলের মতো বিষয়ে মাত্রিক ও গুণগত গবেষণা পদ্ধতির মিশ্রন অনেক বেশি দেখা যায়, যেখানে পর্যবেক্ষণের উপজীব্য যারা অথবা যে সকল উপাদান, তাদের মনোভাব, মতামত, ধারণা, উপলব্ধিকে যথাযথ গুরুত্ব দিলেও প্রয়োজন অনুসারে উপকরণসমূহের বৈশিষ্ট্যাবলীকে মাত্রিকভাবে প্রকাশে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। এতে গবেষণার প্রক্রিয়া অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত, সুসংগঠিত, প্রণালীবদ্ধ উপায়ে কার্যকরী ভাবে সম্পন্ন করা যায় এবং প্রাপ্ত ফলাফল অধিক নির্ভরযোগ্য ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপযোগী এবং এগুলির সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা থাকে।