welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

অর্থনৈতিক ভূগোলের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গী (Modern Approach of economic geography )

 অর্থনৈতিক ভূগোলের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গী (Modern Approach of economic geography ) 

গত তিন দশকে অর্থনৈতিক ভূগোলে কয়েকটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গীর উন্মেষ ঘটেছে। সেগুলি হল -

 (i) পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গী (System Approach) : -


পদ্ধতি দ্বারা বিশ্লেষণ কোন তাত্ত্বিক বা দার্শনিক ভাবধারা নয় বরং এটি একটি প্রণালী বিজ্ঞান (Methodology) অর্থনৈতিক ভূগোলে বাস্তবের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, বিভিন্ন সমস্যা, অর্থনৈতিক উপকরণগুলো বুঝতে এই পদ্ধতি দৃষ্টিভঙ্গীর প্রয়োগ শুরু হয়, কারণ পদ্ধতি হল কয়েকটি উপকরণের সম্মেলন। সেই থেকেই অর্থনৈতিক কর্মকান্ড একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে চলে।


(ii) আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গী (Behavioral Approach) :

 বর্তমানে অর্থনৈতিক ভূগোলে আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গীর বিশেষ ব্যবহার হচ্ছে। কোন অঞ্চলে অর্থনীতি সংক্রান্ত মানুষের অভিজ্ঞতা ও তার ভাবনা অর্থনৈতিক ভূগোলের অন্যতম আলোচনার বিষয় । কারণ অভিজ্ঞতা বা নিজস্ব ভাবনার ভিত্তিতেই এক এক স্থানে এক এক রকম অর্থনৈতিক কার্যকলাপের প্রচলন হয় ৷ 

এমনকি উৎপাদনের চাহিদা হ্রাস বৃদ্ধি হওয়া ভোগকর্তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, যা আবার সময় ও পরিস্থিতির অনুসারে তা পরিবর্তিত হতে পারে, যা আবার উৎপাদনকেও প্রভাবিত করে। মানুষের বা সম্পদ ভোগীদের ইচ্ছা, স্বভাব বা সিদ্ধান্ত তৈরীর ক্ষমতা কোন স্থানের অর্থনীতির পটভূমি পরিবর্তন করে দিতে পারে। 

যেমন, চটের চাহিদা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে এক সময় যথেষ্ট ছিল, তাই হুগলি নদীর দুই তীরে অনেক চটকল ছিল কিন্তু নাইলনের প্রচলন ও তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় চটের ব্যবহার এতটাই হ্রাস পায় যে অনেক চটকল এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে যেমন চটকল নির্ভর শ্রমিকদের বেকারত্ব বেড়েছে তেমনি চটের কাঁচামাল চাষকেও প্রভাবিত করেছে। কারণ চাষিদের পাট চাষ করার ইচ্ছেও কমেছে চাহিদা না থাকায় ।


(iii) প্রতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গী (Institutional Approach) :


রন মার্টিন (Ron Martin, 2003) অর্থনৈতিক ভূগোলে প্রতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গীর গুরুত্ব উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ভূদৃশ্যকে বোঝার জন্য ও কোন স্থানের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ কিরূপ হবে বা কিভাবে এটির বিকাশ ঘটবে তা নির্ভর তা সেই স্থানের সামাজিক প্রতিষ্ঠান দেখেই বোঝা যায়। অন্য অর্থে সামাজিক ও প্রতিষ্ঠানিক পরিমন্ডলের ওপর নির্ভর করেই অর্থনৈতিক কার্যকলাপের মান ও গুরুত্ব সবই পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে তাই অর্থনৈতিক ভূগোলে এই প্রতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গীর গুরুত্বও তাৎপর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।


(iv) কল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গী (Welfare Approach) :


কল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গী হল এক বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল পৃথিবীতে মানুষের জীবনের গুনগত মানের দৈশিক ও সামাজিক পার্থক্যকে অনুধাবন করা। এই দৃষ্টিভঙ্গীর প্রবক্তা ডেভিড স্মিথ (D.M. Smith) এর মতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে থাকা মানুষ, সম্পদ ও সেবা পাওয়ার পরিমাণ সমান নয়। তাই মানুষের জীবন কুশলতার মানও বিভিন্ন হয়। এই বন্টন এর প্রকৃতি নিয়ে ভূগোলে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরী বিশেষত অর্থনৈতিক ভূগোলে।

 অর্থনৈতিক ভূগোলের সর্বশেষ উদ্দেশ্যই হল মানব কল্যাণ । এই কারণ কল্যাণকামী ভৌগোলিকরা কল্যাণমুখী অর্থনৈতিক সুত্র (Welfare Economics) দিয়েছেন। এর সাহয্যে পশ্চাদপদ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে তাদের উন্নয়নের যথাযথ পরিকল্পনা নেওয়া যায়। বর্তমানে তাই আয়, বন্টন বিন্যাস, সম্পদের পরিমাণ ও তার বন্টন শিল্পের কাম্য অবস্থান নির্ণয়, কর্মসংস্থান ও বেকারত্ব ইত্যাদি বিষয়গুলি অর্থনৈতিক ভূগোলে অর্ন্তভূক্ত হয়েছে এই দৃষ্টিভঙ্গীকে অনুসরণ করে।

Middle post ad 01