ওজোন স্তরের সৃষ্টি ( Formation of Ozone Layer) :
বায়ুমণ্ডলে স্ট্যাটোস্ফিয়ারে অতিবেগুনি রশ্মির (UV-রশ্মি) উপস্থিতিতে দুটি অনুক্রমিক আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি হয়। তবে সকলপ্রকার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে সাহায্য
করে না। সাধারণত কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে সাহায্য করে। সূর্য থেকে পৃথিবীর দিকে আগত অতিবেগুনি রশ্মিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়, যথা— UV-A (তরঙ্গদৈর্ঘ্য 0.315-0.4 pm); UV-B (0.280–0.315 pm); UV-C (0.100.28 pm)। এদের মধ্যে UV-C এবং UV-B এর কিছু অংশ ওজোন গ্যাস তৈরিতে সাহায্য করে। প্রথম বিক্রিয়ায় দ্বি-পরমাণুবিশিষ্ট অক্সিজেন অণু (O) UV-C এবং UV-B দ্বারা বিয়োজিত হয়ে দুটি জায়মান অক্সিজেন পরমাণু (O) তৈরি করে।
ওজোন অণুর বিশ্লেষণের এই বিক্রিয়াকে আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে। দ্বিতীয় বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অক্সিজেন পরমাণুর (O) সঙ্গে অক্সিজেন অণুর (O2) সংযোজনে ওজোন গ্যাস সৃষ্টি হয়। এই বিক্রিয়ায় প্রচণ্ড তাপ উৎপাদন হয় বলে একে তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া বলে। ওজোন গ্যাস সৃষ্টির কারণে প্রতিনিয়ত তাপ উৎপাদনের জন্যই স্ট্যাটোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা বেশি হয়।
প্রথম বিক্রিয়া:
UV-C এবং UV-B রশ্মি
O² --O+O
দ্বিতীয় বিক্রিয়া:
O²+O+ (M)→ O² + (M) [M = অনুঘটক]
এ ছাড়া, বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গ্যাসও (NO) ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গ্যাসটি 0.43 pm তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কম আলোকরশ্মি (স) দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO) এবং অক্সিজেন পরমাণু (O) তৈরি করে।
NO2 + 2 → NO +O
এরপর অক্সিজেন পরমাণুটি (O) তাপ উৎপাদী বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন অণুর (O) সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওজোন গ্যাস (O.) তৈরি করে।
O² +O+ (M) → O² + (M)