ক্রেতা বা ভোক্তার পছন্দ প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান (Factors Affecting Buyer or Consumer Choice):
ক্রেতার পছন্দ তার সাংস্কৃতিক, সামাজিক, ব্যক্তিগত এবং মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত হয়।
কোন একটি বিশেষ পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়সমূহ প্রভাব বিস্তার করে। ফলে বিভিন্ন ক্রেতা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পছন্দ হয়ে থাকে। এই উপাদানসমূহ বেশির ভাগই বাজারজাতকারীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবুও এই বিষয়গুলি বিবেচনার মধ্যে আনতে হয়।
I. সাংস্কৃতিক উপাদান (Cultural Factors) :
ক্রেতার পছন্দের উপর সাংস্কৃতিক উপাদান ব্যাপক এবং গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করে। তাই সাংস্কৃতিক উপাদান সমূহ কিভাবে ক্রেতার পছন্দকে প্রভাব বিস্তার করে তা বাজারজাতকারীকে (Marketers) অবহিত থাকতে হয়। কোনো দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার পছন্দ কিভাবে বিভিন্ন উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
(a) সংস্কৃতি (Culture) :
সাধারণভাবে সংস্কৃতি বলতে সমাজের মানুষের এক বা একাধিক রীতিনীতি, ধ্যানধারণা আচরণকে বুঝায়। একজন ক্রেতা কোন সময়কে তার সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করতে পারে না। এই সংস্কৃতি দ্বারাই মানুষের অভাব, আচরণ এবং পছন্দ (Choice) সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়। মানুষের পছন্দ বেশিরভাগই শিক্ষা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। একটি শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে পরিবার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে মৌলিক মূল্যবোধ, পছন্দ আচরণ, প্রেষণা ইত্যাদি শিক্ষার মাধ্যমে আয়ত্ব করে। মানুষের ব্যস্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে মাইক্রোওয়েভ অথবা রেডিমেট খাবার সামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে বিশেষ করে বাজারজাতকারী (Marketers ) সাংস্কৃতিক পরিবর্তন গুলো চিহ্নিত করে নতুন পণ্যের চাহিদা পূর্বানুমান করার চেষ্টা করছে। তাই যা যায়, ক্রেতারা কোন ধরনের পছন্দ পদ্ধতি গ্রহণ করবে, কিভাবে ক্রয় করবে, কিভাবে মূল্য নির্ধারণ করবে, কোন পণ্য ক্রয় করবে ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ দেশের সংস্কৃতি দ্বারা নির্ধারিত হয় ।
(b) উপ-সংস্কৃতি (Subculture) :
সংস্কৃতিতে আবার উপ-সংস্কৃতিরও অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। ধর্ম, পেশা, সম্প্রদায়, জাতীয়তাবোধ, বয়স অঞ্চল ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে সংস্কৃতিকে বিভিন্ন উপ-সংস্কৃতিতে বিভক্ত করা যায়। ভারতীয় সংস্কৃতিকে বিভিন্ন প্রকার উপ-সংস্কৃতিতে বিভক্ত করা যায়। ধর্মের ভিত্তিতে চার ধরনের উপ-সংস্কৃতি দেখতে পাওয়া যায় যেমন - মুসলিম, হিন্দু, খ্রীষ্টান এবং বৌদ্ধ। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বিবাহের আচার অনুষ্ঠানে হিন্দু ধর্ম এবং মুসলিম ধর্মের পার্থক্য সুস্পষ্ট। ধর্মীয় কারণে হিন্দুরা গরুর মাংস খায় না এবং মুসলমানরা শুকরের মাংস খায় না। সুতরাং উপ-সংস্কৃতি একজন ক্রেতার পছন্দকে প্রভাবিত করে।
(c) সামজিক শ্রেণী (Social Class) :
সাধারণত আয়, পেশা, শিক্ষা, সম্পদ, মূল্যবোধ ইত্যাদির সংমিশ্রণে সামাজিক শ্রেণী নির্ধারিক হয় যা মানুষের ক্রয় পছন্দের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সাধারণত সমাজ কাঠামোকে তিনটি মূল শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন উচ্চবিত্ত শ্রেণী, মধ্যবিত্ত শ্রেণী ও নিম্নবিত্ত শ্রেণী। এই সকল শ্রেণীর মধ্যে আয়, রুচি, ভোগ, পোশাক, আসবাবপত্র ইত্যাদির ক্ষেত্রে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যখন ভ্রমণের কথা চিন্তা করেছে। তখন নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ নিজের প্রয়োজনীয় বিষয় ক্রয়ের কথা চিন্তা করেছে।
॥ সামাজিক উপাদান (Social Factors) :
সামাজিক উপাদান দ্বারাও ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতার পছন্দ প্রভাবিত হয়। সামাজিক উপাদানের প্রধান বিষয়গুলো হলো দল, পরিবার, সামাজিক ভূমিকা এবং মর্যাদা। সামাজিক এ সকল উপাদান দ্বারা যেহেতু ক্রেতার পছন্দ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়, তাই একজন বাজারজাতকারীকে তার পণ্যের বাজারজাতকরণ কৌশল (Marketing strategy) নির্ধারণের সময় এই সকল উপাদান বিবেচনায় রাখতে হয়। সামাজিক উপাদানগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল।
(a) দল (Groups) :
কোজন ব্যক্তির পছন্দ অনেক গুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল দ্বারা প্রভাবিত হয়। যে দলটিতে ব্যক্তি নিজে অবস্থান করে সেই দলের সদস্যগণ তার উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। দুই ধরনের দল .. দেখা যায়। প্রাথমিক দল - যারা নিয়মিত এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলামেশা করে। যেমন – পরিবার, প্রতিবেশী, সহকর্মী ইত্যাদি। মাধ্যমিক দল যাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয় না বা আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়ে থাকে। যেমন – - ধর্মীয় দল, শিল্প সংগঠন ইত্যাদি।
(b) পরিবার (Family) :
সাধারণত পরিবারের সদস্যগণ যেমন পিতা-মাতা, ভাই, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান ইত্যাদি একে অপরের ক্রয়ে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। পরিবার হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গে কিছু পণ্য ক্রয়ে স্বামীদের ভূমিকা দেখা যায়। আবার কিছু পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেওয়া যায়। অনেক সময় সন্তানরা ক্রয় এর ক্ষেত্রে পিতা মাতাকে প্রভাবিত করে। আবার ব্যয়বহুল পণ্যের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। পিতা মাতার ক্রয় পছন্দ পরিবারের অন্য সদস্যদের ক্রয় অভ্যাস গঠনে সহায়তা করে। ফলে বাজারজাতকরণ নির্বাহীকে পরিবারের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বাজারজাতকরণ কৌশল গ্রহণ করতে হয়।
(c) ভূমিকা এবং মর্যাদা (Role and Status) :
সাধারণত ভূমিকা বলতে চারপাশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যক্তি কার্য সম্পাদন করাকে ভূমিকা বলে। একই সঙ্গে পরিবার, ক্লাব, সংগঠন, অফিস ইত্যাদি বহু দলের সদস্য হতে পারেন। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ভূমিকার ভিন্নতা দেখা যায়। একই ব্যক্তি কখনো পিতা, কখনো পুত্র, কখনো স্বামী, কখনো অফিস বস, কখনো ক্লাবের সভাপতি হিসাবে ভূমিকা পালন করতে পারে। সমাজের প্রতি সাধারণত শ্রদ্ধাবোধ পোষণ করাকে মর্যাদা বলে। একজন ব্যক্তি তার সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী পণ্য ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার তুলনায় নিম্ন কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ভিন্নতার জন্য তাদের ক্রয় পছন্দও ভিন্ন হয়। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এমন ধরনের পোশাক কিনবে এবং পরবে যার মাধ্যমে তার ভূমিকা এবং মর্যাদার প্রতিফলন ঘটে।
III. ব্যক্তিগত উপাদান (Personal Factor) :
একজন ব্যক্তির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য যেমন – বয়স, আয়, পেশা, জীবনচক্র জীবন ধরন, ব্যক্তিত্ব, নিজস্ব ধারণার ইত্যাদি দ্বারা তার ক্রয় পছন্দ প্রভাবিত হয় যা নিম্নে আলোচনা করা হল –
(a) বয়স ও জীবন চক্রের স্তর (Age and life Cycle Stage) :
বয়সের পার্থক্যের কারণে দ্রব্য এবং সেবাক্রয়ে পছন্দের যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। একজন মানুষ তার জীবনকালে বহুবার পণ্য এবং সেবা বদল করে। শিশু কাল, যৌবন এবং বৃদ্ধ বয়সে মানুষ একই ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে না। তাই জীবনচক্রের প্রত্যেকটি স্তর ক্রেতার ক্রয় পছন্দকে প্রভাবিত করে।
(b) পেশা (Occupation) :
ব্যক্তির পেশা তার পণ্য ক্রয়ের পছন্দকে প্রভাবিত করে। একজন ডাক্তার এবং একজন ব্যবসায়ীর সেবা বা পণ্য ক্রয় এক রকম হয় না। পেশার ভিন্নতার কারণে ব্যক্তির আয়, মর্যাদা, চাহিদা ভিন্ন হয়ে থাকে। একজন ডাক্তারের নিকট গাড়ি প্রয়োজনীয় পণ্য কিন্তু একজন সাধারণ কর্মচারীর নিকট বিলাস পণ্য হিসাবে পরিগণিত হয়। ফলে ব্যক্তির পেশায় তারতম্য পণ্য বা সেবা ক্রয়ে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
(c) অর্থনৈতিক অবস্থা (Economic Conditions) :
কয়েকটি ক্ষেত্রে ক্রেতার অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রেতার পছন্দকে প্রভাবিত করে। দামি পণ্য ব্যবহার এবং কমদামি পণ্য ব্যবহার মূলতঃ ব্যক্তির আয়ের উপর নির্ভরশীল। কম আয় সম্পন্ন ব্যক্তি দেশ ভ্রমণের কথা চিন্তা করতে পারে না। ঋণ গ্রহণের সুযোগ এবং ক্ষমতা ব্যক্তির জীবন যাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যদি অর্থনীতিতে মন্দা অবস্থা বিরাজ করে তবে বাজারজাতকারীকে তার পণ্যের এবং বাজারজাতকরণ প্রোগ্রামের বিভিন্ন বিষয়ের পরিবর্তনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
(d) জীবনধাঁচ (Life Style) :
একজন ব্যক্তির জীবন ধারা তার ক্রয়ের পছন্দকে প্রভাবিত করে। জীবন যাপন প্রণালী হচ্ছে ব্যক্তির জীবনধারণের ধরন যা তার কাজকর্মে আগ্রহ এবং মতামতের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। দুই ব্যক্তির একই উপসংস্কৃতি, সামাজিক শ্রেণী এমনকি একই পেশার হলেও তাদের জীবনের ধাঁচ ভিন্নতার কারণে ক্রেতার পছন্দের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। দুই জন কলেজের অধ্যাপকের মধ্যে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
(e) ব্যক্তিত্ব এবং নিজস্ব ধারণা (Personality and Self-Concept) :
ব্যক্তিত্ব বলতে একজন ব্যক্তির নিজস্ব গুণাবলী অথবা ব্যক্তির দোষ-গুণ বোঝায়। একজন ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিত্ব দিয়ে আলাদা করা যায়। সাধারণত আত্মবিশ্বাস, মনোভাব, কতৃত্ব বজায় রাখা, সৃজনশীল, মূল্যবোধ, বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি ব্যক্তিত্বের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এই সকল বৈশিষ্ট্য ব্যক্তির ক্রয়ের পছন্দের উপর প্রভাব বিস্তার করে। একজন সৃজনশীল ব্যক্তির ক্রয় সাধারণ ব্যক্তির চেয়ে ভিন্নতর হয়ে থাকে। অন্যদিকে ব্যক্তিত্বের সাথে ব্যক্তির নিজস্ব ধারণার সম্পর্ক থাকে। এখানে নিজস্ব ধারণা ব্যক্তির নিজের সম্পর্কে অনুভূতি, বিশ্বাস ও প্রত্যক্ষণের সমন্বয় বুঝায়। একটি চলমান ঘটনাকে দুইজন ব্যক্তি দুই ভাবে মূল্যায়ন করতে পারে। বিজ্ঞাপনের ধরণকে সকল ক্রেতা একই ভাবে প্রত্যক্ষ করে না।
IV. মনস্তাত্বিক উপাদান (Psychological Factors) :
ব্যক্তির বা ভোক্তার ক্রয় পছন্দ মনস্তাত্বিক উপাদান দ্বারাও ব্যক্তি প্রভাবিত হয়। ব্যক্তির ক্রয় পছন্দ প্রধানত চারটি মনস্তাত্বিক উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়, এগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল –
(a) প্রেষণা ( Motivation) :
কোন প্রয়োজন যখন ব্যক্তিকে সন্তুষ্টি সন্ধানে উদ্দীপিত করে তখন তাকে প্রেষণা বলে। ব্যক্তির দুই ধরণের প্রয়োজন থাকে। জৈবিক প্রয়োজন জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় যেমন – খাদ্য, পানীয়, আশ্রয়, বায়ু ইত্যাদি। সামাজিক প্রয়োজন সমাজে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ যেমন – নিরাপত্তা, সম্মান, ভালবাসা ইত্যাদি। একটা নির্দিষ্ট সময়ে মানুষ অনেক গুলো প্রয়োজন অনুভব করে। একটা প্রয়োজন তখনই উদ্দেশ্য (Motive) পরিণত হয় যখন তা ব্যক্তির মধ্যে চাপ প্রয়োগ করার মতো তীব্রতা জাগ্রত করতে পারে। প্রেষণা এমন একটি শক্তি যা মানুষকে পরিচালিত করে এবং মানুষের মধ্যে কর্ম সম্পাদনের শক্তি যোগায়।
(b) উপলব্ধি (Perception) :
উপলব্ধি ব্যক্তির ক্রয়ের পছন্দকে দারুণ ভাবে প্রভাবিত করে। ব্যক্তি কিভাবে ক্রিয়া করবে তা নির্ভর করে পরিস্থিতিকে সে কিভাবে উপলব্ধি করছে। দুই ব্যক্তি একই প্রেষণায় প্রেষিত মা হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ক্রিয়া করতে পারে। একই বিজ্ঞাপন দুই জন ব্যক্তির উপর দুই রকম ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। একজন বিজ্ঞাপনকে সৃষ্টিশীল হিসাব উপলব্ধি করতে পারে অন্য জন একটাকে বিরক্তিকর মনে করতে পারে। বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্নভাবে প্রত্যক্ষণ সৃষ্টির কারণ হচ্ছে তিনটি প্রত্যক্ষ প্রক্রিয়া।
(c) শিক্ষণ (Learning) :
শিক্ষণ ক্রেতার পছন্দের একটি মৌলিক উপাদান। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ক্রেতার পছন্দের পরিবর্তনকেই শিক্ষণ বলে। ব্যক্তি বিভিন্ন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলে শিক্ষণের মাধ্যমে তার সমাধান খুঁজে নেই ব্যক্তির বেশির ভাগ আচরণই শিক্ষালব্ধ বার বার বিজ্ঞাপণ প্রদর্শনের মাধ্যমে ব্যক্তির ক্রয় মনোভাবকে জাগ্রত করা হয় ।
(d) বিশ্বাস ও মনোভাব (Beliefs and Attitudes ) :
বিশ্বাস ও মনোভাব ক্রয় পছন্দকে প্রভাবিত করে। কোন কোম্পানীর পণ্যের গুণগতমান সম্পর্কে ক্রেতার ইতিবাচক বিশ্বাস জন্ম নিতে পারে। এই বিশ্বাস প্রকৃত জ্ঞান, আস্তা অথবা মতামতের উপর প্রতিষ্ঠিত। বাজারজাতকারীর দায়িত্ব হচ্ছে ব্যক্তির মধ্যে বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা। যদি পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ভুল বিশ্বাস জন্ম নেয় তবে সেটা সংশোধন কার ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যদিকে মনোভাব দ্বারা ব্যক্তির কোন ধারণা বা বিষয় সম্পর্কে তুলনামূলকভাবে দৃঢ় মূল্যায়ন, অনুভূতি এবং প্রবণতা প্রকাশ পায়। রাজনীতি, ধর্ম, সংগীত, পোশাক, খাদ্য, জীবন প্রণালী এবং প্রায় সব ব্যাপারে মানুষের একটা মনোভাব থাকে। এ মনোভাব মানুষের মধ্যে এমন একটা কাঠামো তৈরী করে যা দ্বারা সে কোন বিষয় গ্রহণ অথবা সেখান থেকে বিরত থাকে।
অনেক মানুষ KFC (Kentucky Fried Chicken) এর খাবারের গুণগত মান সবচেয়ে ভালো এইরূপ মনোভাব প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির মনোভাব পরিবর্তন করা বেশ জটিল কাজ। মনোভাব পরিবর্তনের জন্য অনেক কিছুর সমন্বয় প্রয়োজন। বাজারজাতকারীর গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ক্রেতাদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরী করে।