গড় ভোগপ্রবণতা ও প্রান্তিক ভোগপ্রবণতার মধ্যে পার্থক্য (Difference between Average Propensity to Consume [APC] and Marginal Propensity to Consume [MPC) )
(1) গড় ভোগপ্রবণতার (APC) সাহায্যে প্রতি একক আয় থেকে সম্ভাব্য ভোগব্যয় সম্পর্কে জানা যায়।
অন্যদিকে,
প্রান্তিক ভোগপ্রবণতা (MPC) অতিরিক্ত একক আয় থেকে উদ্ভূত অতিরিক্ত ভোগব্যয়কে নির্দেশ করে।
(2) মোট আয়ের কত অংশ ভোগে ব্যয় হয় তা APC নির্দেশ করে। যেমন উদাহরণ-1, 2 অনুসারে 100 (টাকা) আয় হলে ভোগব্যয় 70 শতাংশ।
আবার,
MPC-র মাধ্যমে ভোগব্যয়ের পরিবর্তনশীলতা সম্পর্কে জানা যায়। যেমন উদাহরণ-1 অনুসারে আয় 100 (টাকা) থেকে 200 (টাকা) বা 200 থেকে 300 অথবা 300 থেকে 400 হলে প্রান্তিক ভোগব্যয় প্রতি স্তরে 10 শতাংশ হ্রাস পায়।
(3) অধ্যাপক কেইস (Keynes)-এর মতে আয় বাড়লে ভোগব্যয় বাড়ে।
কিন্তু আয়ের বৃদ্ধির তুলনায় ভোগব্যয়ের বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে কম হয়।
অর্থাৎ MPC-র মান ধনাত্মক হবে, কিন্তু এককের চেয়ে কম হবে (0 < MPC < 1)। তবে যদি Y, C হয়, তাহলে C/Y - APC - 1 হবে। আবার, Y> C হলে, C/P APC <1 এবং CY হলে C/Y - APC > 1 হবে।
(4) APC নির্ধারণের জন্য একটি আয়স্তর ও সেই আয়স্তরে ভোগব্যয়ের পরিমাণ জানতে হয়।
অন্যদিকে,
MPC নির্ধারণের জন্য দুটি আয়স্তর ও দুটি ভোগব্যয় স্তর জানা দরকার।
এঙ্গেল-এর বিধি (Engel's Laws) : 1857 সালে সংখ্যাতত্ত্ববিদ
আরনেস্ট এঙ্গেল (Ernest Engel) দেখিয়েছেন যে ভোক্তার আয় বাড়লে আনুপাতিক হারে খাদ্যদ্রব্যের ওপর তার ব্যয় (ভোগব্যয়) কমতে থাকে। সংশ্লিষ্ট চিত্রের উল্লম্ব অক্ষে ভোগ (C) এবং অনুভূমিক অক্ষে আয় (Y) পরিমাপ করা হয়েছে। এই রেখাটির ওপর যে-কোনো বিন্দুতে রেখাটির ঢাল ভোক্তার প্রান্তিক ভোগপ্রবণতার (MPC) পরিমাণকে নির্দেশ করে। জ্যামিতিক ভাবে C/ Y = APC = OA রেখার ঢালের সমান। আলোচ্য বিধিটি এঙ্গেল-এর বিধি (Engel's Law) নামে পরিচিত। এই বিধি থেকে কোনো দেশের জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
প্রসঙ্গত, এসেল গুণাঙ্ক (Engel's coefficient) বাড়লে কোনো দেশের জীবনযাত্রার মান কমে এবং এঙ্গেল গুণাঙ্ক কমলে দেশটিতে জীবনযাত্রার মান বেড়েছে বলে মনে করা হয়। অর্থনীতিবিদ লিওন (Leon, 1967) এবং প্যাসিনেত্তি (Passinetti, 1981) কোনো দেশে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে অর্থনৈতিক প্রগতি হচ্ছে কিনা, জানার জন্যও এঙ্গেল বিধি প্রয়োগ করা যায় বলে মনে করেন।