welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

পৌরবসতি (Urban Settlement)

সমাজবিজ্ঞানী লুই ওয়ার্থ (Louis Wirth) নগরীর একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে," A relatively large, dense and permanent settlement of socially heterogeneou

 পৌরবসতি বলতে কি বোঝায় (What   is meant by Urban Settlement) 



অপেক্ষাকৃত জনবহুল, উন্নত রাস্তাঘাট, পরিবহন ও যোগাযোগের সুবিধাযুক্ত, উন্নততর বাসস্থান সমন্বিত, জলসরবরাহ ও পয়ঃপ্রণালীর আধুনিক ব্যবস্থাযুক্ত অঞ্চলকে পৌরবসতি বলে।

 পৌরবসতি বিভিন্ন আয়তনের শহর ও নগর নিয়ে গড়ে ওঠে। পূর্বে বিভিন্ন ধরনের পৌরবসতি সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। 

এখন নগরীর ভৌত ও বাস্তুতান্ত্রিক সংজ্ঞা, পৌরবসতির কর্মভিত্তিক গঠন, শহরের কার্যাবলীভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হল।


নগরীর ভৌত ও বাস্তুতান্ত্রিক সংজ্ঞা (The Physical and Ecological Definition of a City)

 নগরীর সংজ্ঞ নির্ধারণ পদ্ধতি (Methods of Defining a City)


পৌর ভূগোলে নগরের সংজ্ঞা নির্ধারণে দুটি পদ্ধতি অনুসৃত হয়। একটি পদ্ধতি হল ভৌত সংজ্ঞা (Physical definition)। নগরীর অবস্থান, নগরীর জন্ম ও বৃদ্ধি এবং একের সঙ্গে অপরের সম্পর্ক ও পারম্পরিক অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক এই সংজ্ঞার অন্তর্গত। এছাড়া নগরীগুলির আন্তঃবিন্যাস, এদের ভূমির ব্যবহার, কর্মাঞ্চল এবং সমাজ ও সংস্কৃতির ধরণ—এসবও আলোচ্য সংজ্ঞার অর্ন্তভুক্ত।


অপর পদ্ধতিটি হল বাস্তুতান্ত্রিক সংজ্ঞা (Ecological definition )। এই সংজ্ঞার অর্ন্তভূক্ত হল নগর সমাজের আভ্যন্তরীণ বিন্যাস ও গঠনের মধ্যে সম্পর্ক, বিভিন্ন প্রতিবেশী অঞ্চল ও জেলাগুলির সঙ্গে মনুষ্য-সৃষ্ট নগর পরিবেশের সম্পর্ক ইত্যাদি।


নগরীর সংজ্ঞা (Definition of a City)


সমাজবিজ্ঞানী লুই ওয়ার্থ (Louis Wirth) নগরীর একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে," A relatively large, dense and permanent settlement of socially heterogeneous individuals” অর্থাৎ “নগরী হল সামাজিক দিক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিবর্গের একটি অপেক্ষাকৃত বৃহৎ, ঘন এবং স্থায়ী জনবসতি।”


ভৌত সংজ্ঞা সংক্রান্ত বৈশিষ্টসমূহ (Features Regarding Physical Definition)


এটি নির্দেশ করে বসতির অবস্থান, উন্মেষ ও বৃদ্ধি, এগুলির আয়তনগত সম্পর্ক এবং ভূমিরূপে দৈশিক বন্টন। এটি আরও নির্দেশ করে যে একটি শহরের ভৌত অবস্থা বা গঠন কিরুপ। পুর্ত ব্লকগুলি ও একক অট্টালিকাটি কিভাবে রয়েছে? বসতিগুলির বিভিন্ন কার্যাবলীর ঘনত্ব এবং বিন্যাসের নক্সা কিরুপ? কিছু আংশিক মডেল রয়েছে,। 

যেগুলি বিবেচনা করে এক ধরনের কার্যপ্রণালী (যেমন বসবাসে অথবা শিল্পে ভূমির ব্যবহার); কিছু পুর্ণাঙ্গ মডেল রয়েছে যেগুলিতে পৌর অঞ্চলের সকল কার্যাবলী এবং তাদের আদর্শ সম্পর্ক বিবেচিত হয়।


নগরে ভূমির ব্যবহারের ধরন বহু প্রকার।


(১) ভূমির ব্যবহার (Land use): 

ভূমির ব্যবহার কি ধরনের হবে সেই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে ভূমিটি কোন অঞ্চলে অবস্থিত তার ওপর। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও রূপায়ণে ভূমিকা নিয়ে থাকেন নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, পরিকল্পনাকার, স্থাপতি, বাণিজ্যিক ও অন্যান্য সংস্থাগুলি। পৌরাঞ্চলে প্রাপ্তব্য স্থানগুলির ব্যবহারকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে। তবে এই প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য পাবে সেই ধরনের ব্যাবহার, যাতে ঐ স্থানটি সর্বাধিক লাভজনক হয়ে ওঠে এবং জমিটির সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া যায়। এইভাবে ব্যবহার করতে পারলেই ভূমির ব্যবহার যথাযথ ও সার্থক হয়ে উঠবে।


(2) (Functional area) কেন্দ্রীয় বাণিজ্য অঞ্চল (Central Business District বা C BD) নগরকেন্দ্র (City centre) নামে অভিহিত হয়। এটি হল নগরীর সেই এলাকা যেখানে রয়েছে মুখ্য বাণিজ্যিক রাস্তাঘাট ও সরকারী বাড়িগুলি। এটি আবশ্যিকভাবে নগরীর ব্যবসা ও পৌরজীবনের কেন্দ্রস্থল। সাধারণভাবে এখানে থাকে নগরীর অধিকাংশ অফিস, বাড়ি ও বৃহত্তম খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র।


জমির মূল্য নগরকেন্দ্রে চূড়ান্ত শীর্ষে পৌঁছায় এবং নগরকেন্দ্র থেকে অন্যত্র এই মূল্য বিভিন্ন হারে কমতে থাকে। জমির মূল্য সড়কপথের সংযোগস্থলগুলিতে দ্বিতীয় শীর্ষে থাকে। উচ্চমূলা হয় মুখ্য পরিবহনপথ জালিকাগুলির ধারে ধারে এবং এসব জমির মূল্য রাস্তাগুলির মধ্যবর্তী অঞ্চলের জমির মূল্যের চেয়ে বেশি।


(৩) নগরে ভূমির ব্যবহার অঞ্চল (Land use area of a city )

 খুচরা ব্যাবসায় খাদ্য, বস্ত্র, গৃহস্থালি দ্রব্যাদি, গাড়ি বিক্রয় ও পরিষেবা, অন্যান্য প্রমোদ পরিষেবা।

অর্থলগ্নী অফিস, আর্থিক পরিষেবা, বাণিজ্যের মুখ্যকেন্দ্র, সরকারী ও আইনি অতিথিশালা ও অন্যান্য ক্ষণস্থায়ী বসতি।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য অঞ্চল (C.BD), বসবাস, শিল্প, পাইকারী বিক্রয়, সাংস্কৃতিক, শিল্পগত, গির্জা সংক্রান্ত।

 বাক্তৃতান্ত্রিক সংজ্ঞা সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য (Features Regarding Ecological Definition)


নগরীর বাস্তুতান্ত্রিক সংজ্ঞা সঙ্ক্রান্ত বৈশিষ্ট্য শিকাগো স্কুলের ধারণার অনুযায়ী যা নগরীর আভ্যন্তরীণ বিন্যাসের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। প্রাথমিকভাবে সালে এর সূত্রপাত। নগরীর স্বল্প পরিসরে অনেক বেশি লোককে কেন্দ্রীভূত হতে দেখা যায়।

 নগরীর বাস্তুতান্ত্রিক সংজ্ঞায় সামগ্রিক পরিবেশকে অধ্যয়ন করা হয় মানুষের জীবনধারণের সহায়ক ব্যবস্থা হিসেবে।

 তবে কেন্দ্রীয় সমস্যাটি হল কিভাবে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে জনসাধারণ সংঘবন্ধ হবে। অভিযোজন একটি যৌথ বিষয় যাতে প্রতিযোগিতার বদলে থাকে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা, যা বেঁচে থাকার চাবিকাঠি। 

পৌরায়ণ এর দৈশিক গঠন পরিলক্ষিত হয় বাস্তুতান্ত্রিক ধারণার দ্বারা যা পরস্পর নির্ভর তিনটি প্রতিদানকারী কার্যকারণ সম্পর্ক দ্বারা রচিত। 

(1) জনসংখ্যা (Population) কার্যগত দিক থেকে সম্পুরিত একটি শ্রেণী।

 (2) সংগঠন শ্রেণীর মধ্যে সামাজিক ও আর্থিক সম্পর্ক (শ্রেণীর ওপর ভৌত পরিবেশের প্রভাব) 

(3) প্রযুক্তি—টিকে থাকার ও সংগঠিত হওয়ার জন্য শ্রেণী দ্বারা ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও পদ্ধতি।


তবে উপকরণসমূহের যথেষ্ট সুপষ্টতার অভাবের জন্য এবং জনগণের মূল্যবোধ, বিবেচনা, আবেগ, অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গি এবং পছন্দকে যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই ধারণা সমালোচিত হয়েছে।

Middle post ad 01