welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ (Subsistence farming)

পৃথিবীতে 9000-10,000 বছর আগে নিওলিথিক পর্বে ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষির গোড়াপত্তন ঘটে। কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, আদিম

      জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ       

      (Subsistence farming)      

কৃষিভিত্তিক সমাজের আদিম অর্থনৈতিক পরিসরে, জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক (Subsistence) কৃষিকাজই ছিল মানুষের প্রথম এবং প্রধান উৎপাদনশীল কর্মধারা (Productive activities)।


শ্রমপ্রগাঢ় যে কৃষিব্যবস্থায় উৎপাদিত ফসলের ওপর নির্ভর করে শুধুমাত্র মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ হয়, তাকেই জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক (Subsistence) বা স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষিব্যবস্থা বলে।


2000 সালে প্রকাশিত "The Dictionary of Human Geography" গ্রন্থে অধ্যাপক Johnston বলেছেন—“Subsistence Agriculture without market involvement of any sort is referred to as a tribal or 'Primitive' economy"


পৃথিবীর প্রথম জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ


উদ্ভব (Origin) : 

পৃথিবীতে 9000-10,000 বছর আগে নিওলিথিক পর্বে ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষির গোড়াপত্তন ঘটে। কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, আদিম মেক্সিকোতে ভুট্টা ও আলু চাষের মধ্য দিয়ে প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষির সূচনা হয়।


 বৈশিষ্ট্য (Characteristics) : 

জীবিকাসাভিত্তিক কৃষির বৈশিষ্ট্যগুলি হল— (i) জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিতে মানুষ ছোটো ও বিক্ষিপ্ত জমিতে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় খাদ্যের চাহিদা মেটাতে, ফসল উৎপাদন শুরু করে।


(ii) এই কৃষিতে মানুষ অতিপ্রাচীন প্রথায় গোরু, মহিষ প্রভৃতি পশু এবং লাঙল, গাঁইতি, কাস্তে প্রভৃতি ব্যবহার করে ফসল ফলাতে থাকে।


(iii) কৃষিজ উৎপাদন এখানে চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট কম। এই কৃষির প্রধান উৎপাদিত শস্যগুলি হল জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা, ধান, বুনো আলু প্রভৃতি।


(iv) জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষি স্থানীয় ঋতুর ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। 

(v) প্রাচীন কালে অধিকাংশ জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষি নদী-তীরবর্তী সমতলভূমি, পাহাড়ি কিংবা অরণ্যাবৃত পরিবেশে অনুসৃত হত।


(vi) এই কৃষির উৎপাদিত ফসলকে ব্যবহার করার পর কৃষকদের জন্য আর কোনও ফসল অবশিষ্ট থাকতো না। (vii) স্থায়ী কিংবা স্থানাস্তরী উভয় পদ্ধতিতেই জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষি গড়ে উঠেছিল।


শ্রেণিবিভাগ (Classification) : 

পৃথিবীতে জীবিকাসাভিত্তিক কৃষিকাজের ক্রমিক বিবর্তন অত্যন্ত ধীরগতিতে ঘটেছিল।


এ প্রসঙ্গে 1975 খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক Bender তাঁর "Farming in the Prehistory" গ্রন্থে উল্লেখ করেছিলেন— "Thetransition from hunting and gathering to food production was a gradual process. There was no sudden change from a miserable, shiftless existence to stability and secured supplies."


জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজের দুটি ভিন্নরূপ দেখা যায়, যে


1. স্থানান্তর বা পরিযায়ী আদিম জীবিকাসাভিত্তিক কৃষিকাজ (Shifting or Migratory Primitive subsistence agriculture)


2. স্থায়ী প্রাচীন জীবিকাসাভিত্তিক কৃষিকাজ (Sedentary Primitive subsistence agricultur)


1. স্থানান্তর বা পরিযায়ী আদিম জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ (Shifting or Migratory Primitive Subsistence agricultur)


জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষির মধ্যে সর্বাপেক্ষা সরল ও প্রাচীন কৃষিব্যবস্থা হল স্থানান্তর বা পরিযায়ী আদিম জীবনধারণকারি কৃষিকা


যে প্রাচীনপন্থী, অনুন্নত ও অস্থায়ী কৃষিব্যবস্থায় মানুষ নির্দিষ্ট জমিতে দীর্ঘদিন চাষবাস না করে কয়েকবছর ছাড়া ছাড়া জমি পরিত্যাগ করে ফসল ফলিয়ে জীবিকা অর্জন করে, তাকেই স্থানান্তর বা পরিযায়ী আদিম জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ বলে


বিখ্যাত গবেষক Pelzer বলেছেন, “স্থানান্তরী জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষি এমন এক কৃষি যেখানে কৃষক পর্যায়ক্রমিক শস্য বপনের পরিবর্তে পর্যায়ক্রমিক কৃষিজমির পরিবর্তন করে


স্থানান্তরের কারণ (Causes of Migration) : 

স্থানান্তর কৃষিব্যবস্থায় কৃষকরা প্রথমে বনজঙ্গল, ঝোপ-ঝাড় কেটে তাকে শুকনো করে পুড়িয়ে ফেলে। পরে সেই পোড়া ছাই মাটি খনন করে মিশিয়ে দেয় এবং তাতে নানা ধরনের শস্যবীজ ছড়িয়ে ফসল ফলায়। এই ধরনের ছাইমিশ্রিত মাটিতে প্রথম 2-3 বছর ফসল ভালো হলেও, পরের বছরগুলি থেকে মাটি ক্রমশ উর্বরতা হারাতে থাকে। মাটির এই উর্বরতা ফিরে আসতে প্রায় 8-20 বছর সময় লেগে যায়। এর ফলে উপজাতি কৃষকরা জমি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হ


প্রসঙ্গত, বেশিব, ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানান্তর কৃষিকাজ বনজঙ্গল পুড়িয়ে করা হয়ে থাকে বলে এই কৃষির অপর নাম। "Slash and burn Agriculture


 অবস্থান ( Location) : 

সাধারণত ক্রান্তীয় বা উপক্রান্তীয় অঞ্চলের দুর্গম পার্বত্যভূমি, মালভূমি কিংবা অরণ্যভূমি অঞ্চলগুলিতে আদিম স্থানান্তর জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষি অনুসৃত হয়


বিশেষ করে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, পূর্ব আফ্রিকার মালাগাসি, মাদাগাস্কার, মধ্য আফ্রিকার কঙ্গো, উত্তর আমেরিকার মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন বিভিন্ন স্থানে এই কৃষিব্যবস্থা আজও লক্ষ করা যা


 বিভিন্ন নাম (Different Names) 

 আদিম জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজ কোথায় কী নামে পরিচিত তা নিম্নলিখিত ছকে উপস্থাপন করা হল।

জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of subsistance Shifting Agriculture)

 জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ, যেমন—


1. উদ্দেশ্য (Aim) : ভ্রাম্যমান উপজাতি গোষ্ঠীর কৃষকরা শুধুমাত্র ক্ষুধা নিবারণ ও জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যেই স্থানান্তর কৃষিকাজ গ্রহণ করে থাকে।


2. প্রকৃতি (Nature): প্রাচীন শ্রমনিবিড় এই কৃষি ব্যবস্থায় কোনও পাহাড়ি বা অরণ্যময় জনহীন অঞ্চলে, বিক্ষিপ্তভাবে T বনজঙ্গল পুড়িয়ে ফসল ফলানো হয়। 3-4 বছর ফসল ফলানোর পর ওই জমিটি পরিত্যক্ত থেকে যায়।


3. নিয়ন্ত্রণ (Control) : স্থানান্তর জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে উপজাতি গোষ্ঠী মধ্যেকার সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও বয়স্ক ব্যক্তিরা।


4. অজ্ঞতা ( Ignorance) : স্থানান্তরী উপজাতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনও যোগাযোগ থাকে না। তাই আধুনিক কৃষিকাজ সম্পর্কে অজ্ঞ এই উপজাতি সম্প্রদায়গুলি পরিবেশের কথা বিবেচনা না করেই দীর্ঘদিন। ধরে অতিপ্রাচীন প্রথায় কৃষিকাজ করে চলেছে।


5. ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি (Using apparatus) : জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজে অতি প্রাচীন যন্ত্রপাতিগুলিকেই ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কুড়ুল (Axe), দা (Scythe), হো (Hoe), খননদণ্ড (Digging Stick), মাটির চাঙর ভাঙা যন্ত্র (Clod crusher), চালনি (Seive), কুলো (Winnowing fan) প্রভৃতি।


জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজের সমস্যা (Problems of subsistance Shifting Agriculture) 

আদিম জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজের মাধ্যমে বেশকিছু পরিবেশগত এবং বাস্তুতান্ত্রিক সমস্যার সৃষ্টি হয়,


যেমন :-

(i) অরণ্যবিনাশ : সাধারণত বনভূমি পুড়িয়ে স্থানাস্তর কৃষিকাজ করা হয় বলে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ অরণ্য ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। এই কৃষিতে বিনাশকৃত বনভূমির পুনঃস্থাপন ঘটতে প্রায় 40-50 বছর সময় লেগে যায়। ক্রান্তীয় মণ্ডলের দেশগুলিতে স্থানান্তর কৃষিকাজের মাধ্যমে অরণ্যবিনাশের মাত্রা সর্বাধিক।


(ii) বন্যপ্রাণী ধ্বংস : স্থানান্তর কৃষিকাজে বনভূমি বিনাশের পাশাপাশি বনভূমিকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকা বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ব্যাপকভাবে ধ্বংসের মুখে পড়ে।


(iii) ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি : এখানে বনভূমি কেটে কৃষিকাজের জন্য জমি তৈরি করা হয় বলে ব্যাপকভাবে ভূমিক্ষয় ঘটে। (iv) বন্যাসৃষ্টি : স্থানান্তর কৃষি অধ্যুষিত অঞ্চলে ভূমিক্ষয় জাত পদার্থগুলি স্থানীয় নদী বা জলাধারগুলিতে ক্রমাগত জমতে জমতে সেখানকার জলধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলস্বরূপ স্থানীয় অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়।


(v) জমির উর্বরতা হ্রাস : স্থানান্তর কৃষিকাজে বনজঙ্গল পোড়ানোর ছাই মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে ফসল ফলানো হয়, ফলে জমির উর্বরতা যথেষ্ট হ্রাস পায়।


উপগ্রহ চিত্র মারফত পাওয়া তথ্যানুসারে, সমগ্র বিশ্বব্যাপী প্রায় 280 মিলিয়ন হেক্টর জমিতে এখনও অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে মানুষ জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থানান্তর কৃষিকাজ করে থাকে। তবে, সাম্প্রতিককালে স্থানান্তর কৃষিতে মানুষের অনুন্নত জীবনযাত্রা, প্রয়োজনের তুলনায় কম ফসল উৎপাদন, আঞ্চলিক দুর্গমতা, অনিশ্চিত অর্থনীতি প্রভৃতি এখানে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। 




2. স্বায়ী প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ (Sedentary Primitive Subsistence Agriculture)


মানুষ তার প্রাক্-প্রচলিত আদিম স্থানান্তরী জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজের মধ্য দিয়ে যে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল তা পরিবেশ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অপর এক কৃষিব্যবস্থার জন্ম দেয়, তা হল স্থায়ী প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ (Sedentary Primitive Subsistance Agriculture) সাধারণত যে প্রাচীন কৃষিব্যবস্থায় মানুষ কোনও একটি অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের সুবাদে, স্থায়ীভাবে ফসল কলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, তাকেই স্থায়ী প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ বলা হয়। আসলে এই ধরনের কৃষিব্যবস্থা স্থানান্তর কৃষি ও নিবিড় কৃষিব্যবস্থার মধ্যবর্তী পর্যায়ে বিকশিত হয়।


স্থায়ী কৃষির কারণ (Causes of Sedentary Agriculture):

 পৃথিবীতে স্থায়ী কৃষিব্যবস্থা গড়ে ওঠার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, যেমন—


(i) আদিম স্থানান্তর জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিতে মানুষকে দুর্গম প্রতিকূল পরিবেশে অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে দিন কাটাতে হয়েছে।


(ii) আদিম স্থানান্তরী কৃষিতে উৎপন্ন ফসলগুলি চাহিদার তুলনায় ছিল অত্যন্ত নগণ্য।


(ii) পশুপালক সমাজের অভিজ্ঞতা মানুষকে ধীরে ধীরে স্থায়ী বসতি নির্মাণ ও স্থায়ী কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ করেছিল।


(iv) তা ছাড়া তৎ‍কালীন সময়ে উর্বর নদী-তীরবর্তী সমতলভূমিগুলিতে, ফসল উৎপাদনের দুর্দান্ত পর্যায়ক্রম মানুষ দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ করেছিল, যার ফলস্বরূপ স্থায়ী কৃষির জন্ম হয়।

অবস্থান (Location) : 

প্রাথমিকভাবে স্থায়ী কৃষিব্যবস্থায় সর্বপ্রথম উৎপাদন শুরু হয়েছিল আমেরিকার মেক্সিকো, পেরু, আফ্রিকার সিরিয়া, মিশর, এশিয়ার চিন, ভারত প্রভৃতি দেশসমূহে।


বর্তমানে ক্রান্তীয় অঞ্চলের উদ্বু-আর্দ্র নিম্নভূমিতে (বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্তর্গত দেশসমূহের নদী অববাহিকা অঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী অববাহিকা, পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি), নিম্ন অক্ষাংশীয় আর্দ্র-শুল্ক নিম্নভূমিতে (বিশেষ করে সাভানা তৃণাঞ্চল, ক্রান্তীয় বনভূমির প্রাস্তভাগ প্রভৃতি) জীবিকাসাভিত্তিক স্থায়ী কৃষিকাজ প্রচলিত রয়েছে। > সস্থায়ী প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষির বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Sedentary Primitive Subsistence Agriculture)


স্থায়ী প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজের বৈশিষ্ট্য

1. কৃষিপ্ৰণালী (Agricultural system): প্রাচীন জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক স্থায়ী কৃষিকাজ মূলত দুটি অংশে বিভক্ত ছিল—

(i) মূল বা কম ফলন এবং (ii) দানাজাতীয় শস্য ফলন। প্রথম পর্যায়ের কৃষিকাজটি অনুসৃত হতো গ্রীষ্মপ্রধান অরণ্য অঞ্চলগুলিতে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের কৃষিকাজ অনুসৃত হতো নদী অববাহিকা কিংবা নাতিশীতোয় অঞ্চলের উচ্চ তৃণভূমিগুলিতে। রোপণ ও বপন উভয় পদ্ধতি মেনে অত্যন্ত কাহিক পরিশ্রমে এই কৃষিকাজ করা হতো।


2. বংশানুক্রমিক (Ancestrial) : স্থায়ী জীবিকাসত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকাজ দীর্ঘকাল ধরে বংশপরম্পরার মাধ্যমে চলতে থাকায় জমির ওপর কৃষকদের একটি নিজস্ব অধিকার থাকতো। সমগ্র কৃষিকাজে পুরুষ-মহিলা উভয়েই সমান ভাবে অংশ নিতো।

3 পশুপালন (Animal Husbandry): জীবিকাসাভিত্তিক কৃষিতে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষকরা বাড়িতে পশুপালনও করে থাকে। এখানকার কৃষকরা গেৰু, ছাগল, ভেড়া, শূকর প্রভৃতিকে যেমন গৃহে প্রতিপালন করতো, তেমনি মাঝে মধ্যেই বেশকিছু গবাদি পশুকে চাষের প্রয়োজনেও কাজে ব্যবহার করে।


 আঞ্চলিকশ্রেণিবিভাগ (Regional Classification): 

আঞ্চলিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমগ্র পৃথিবীতে তিন ধরনের প্রাচীন স্থায়ী কৃষিকাজ আজও পরিলক্ষিত হয়, যেমন (a) - নিম্নভূমির স্থায়ী কৃষিকাজ ।


Middle post ad 01