welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের স্তরবিন্যাস Layers of the Interior of the Earth

পৃথিবীর গভীর অভ্যন্তর ভাগের পদার্থের প্রকৃতি সম্বন্ধে আমাদের ধারণা এখনও খুবই সীমিত ও অনুমানমূলক । এই বিষয়েরও রহস্য উন্মোচনে ভূকম্পবিদ্যার সাহায্য নেও

পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের স্তরবিন্যাস Layers of the Interior of the Earth 


পৃথিবীর গভীর অভ্যন্তর ভাগের পদার্থের প্রকৃতি সম্বন্ধে আমাদের ধারণা এখনও খুবই সীমিত ও অনুমানমূলক । এই বিষয়েরও রহস্য উন্মোচনে ভূকম্পবিদ্যার সাহায্য নেওয়া হয় । তাই P ও S এই দুটি তরঙ্গের গতিবেগের তারতম্য ও প্রতিসরণের সাহায্যে পৃথিবীর অভ্যন্তরের গঠন সম্পর্কে বহু তথ্য জানা গেছে । জানা গেছে , পৃথিবী সমসত্ব নয় । গভীরতার সাথে সাথে তার উপাদানের চাপ , তাপমাত্রা ও ঘনত্ব বাড়তে থাকে , ফলে ভূকম্পন তরঙ্গের গতিবেগের ও পরিবর্তন হয় । ভূমিকম্প তরঙ্গের উপরের বৈশিষ্ট্যগুলি বিচার বিবেচনা করে ভূমিকম্প বিজ্ঞানীরা ভূত্বক থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত অংশকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করেছেন । যথা 1. ভূত্বক ( crust ) 2. গুরুমণ্ডল ( mantle ) , এবং 3. কেন্দ্রমণ্ডল ( core ) । এই স্তরগুলি সম্বন্ধে নীচে আলোচনা করা হল-- 

[‡] ভূত্বক ( Crust ) 

 ভূত্বক পৃথিবীর উপরিভাগের একটি অগভীর , শিলাগঠিত স্তর । গুরুমণ্ডলের ওপরে যে কঠিন , হালকা ও পাতলা শিলাস্তরটি পৃথিবীর বেষ্টন করে আছে তাকে বলে ভূত্বক । এই স্তরটি ভূ - অভ্যন্তরের সবচেয়ে উপরের স্তর । এর গড় গভীরতা 35-40 তিনি ধরা হলেও সমুদ্রের নীচে এর বিস্তার 5-10 কিনি এবং স্থলভাগে বা মহাদেশে 20-70 কিমি । 1909 সালে বিজ্ঞানী মোহোরিভিসিক কাল্পা ভ্যালির ত্বকম্পের দুটি পর্যায়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভূহকের একটি একক 60 তিনি । গভীরতাবিশিষ্ট স্তরের উল্লেখ করেন । ভূত্বকের বিভিন্ন গভীরতায় ভূকম্পনের গতিবেগ , চাপ , স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় । করে অনুরূপ অবস্থার মধ্যে ভূপৃষ্ঠে কিছু শিলা সম্বন্ধে ধারণা করতে পারি । এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল -

 1 গঠন (structure) :-

এই স্তরে যতই নীচের দিকে যাওয়া যায় ততই ক্রমশ ভারী আগ্নেয় শিলার সন্ধান পাওয়া যায় । আবার উপরের স্তরে পাওয়া যায় তুলনামূলকভাবে হালকা গ্রানাইট ও ডায়োরাইট শিলা এবং নীচের স্তরে অর্থাৎ মহাসাগরীয় অংশে থাকে ভারী ব্যাসন্ট ও গ্যাব্রো শিলা । একেবারে নীচে পাওয়া যায় পেরিডোটাইট জাতীয় অতিক্ষারকীয় ( ultrabasic ) শিলা । রাসায়নিক গঠন হিসাবে ৪ টি মৌলিক পদার্থ ( অক্সিজেন , সিলিকন , অ্যালুমিনিয়াম , লোহা , ক্যালসিয়াম , সোডিয়াম , পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ) দিয়ে গঠিত এই শিলা । 

2 তাপমাত্রা (temperature) :-

 এই গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে । সাধারণত এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার প্রতি 100 মিটারে 3 ° সে .। অর্থাৎ প্রতি কিমিতে 30 ° সে . কিন্তু পরিমাপের ত্রুটি থাকলে এই তাপমাত্রার সামান্য হেরফের লক্ষ করা যায় । আগের হিসাবে 40 কিমি গভীরতায় অর্থাৎ শিলামণ্ডলের নীচে তাপমাত্রা । যাকে প্রায় 800 900 ° সে . - এর কাছাকাছি । 

3 ঘনত্ব ( Density ) :-

ভূত্বক অপেক্ষাকৃত হালকা পদার্থ দিয়ে গঠিত বলে এই স্তরের আপেক্ষিক ঘনত্ব কম । মহাদেশীয় ভূত্বকের ঘনত্ব 2.7-2.75 গ্রাম / ঘন সেনি । অপরদিকে মহাসাগরীয় ভূত্বকের ঘনত্ব 2.9 গ্রাম / ঘন সেনি । অর্থাৎ এই স্তরের যাবতীয় পদার্থ জল থেকে 2-3 গুণ ভারী ।। 

4 চাপ ( Presure ) :-

ভূ - অভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় এই স্তরের চাপ যথেষ্ট কম । শিলামণ্ডলের গড় চাপ ও কিলোবার । এই চাপ নীচের দিকে ক্রমশ বাড়ে 

5 উপবিভাগ ( Sub - layer ) :-

ভূকম্পীয় তরঙ্গের গতিবেগ ( velocity ) , ভূহক গঠনকারী শিলাসমূহের ঘনত্ব , উন্নতা ও গঠন অনুসারে ভূত্বককে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা ( ক ) মহাদেশীয় ভূত্বক বা অপেক্ষাকৃত লঘু শিলাস্তর বা নিয়াল এবং ( খ ) সামুদ্রিক ত্বক বা গাঢ় গুরুশিলান্তর বা সিনা । 

( A ) মহাদেশীয় ভূক ( Continental crust ) : 

ভূতকের ওপরের যে শক্ত ও কঠিন মহাদেশীয় অংশ রয়েছে যার ওপর আমরা বসবাস করি , তাকে মহাদেশীয় ভূত্বক বলে । ভূত্বকের উপরের অংশ অপেক্ষাকৃত লঘু গ্রানাইট জাতীয় আগ্নিক ( acidic ) শাঠি । এই শিক্ষান্তরে আপেক্ষিক গুৰুত্ব 2.75-2.91 এই অংশে সিলিকন বা সিলিকা ( silica ) ও অ্যালুমিনিয়াম ( aluminium ) এই দুটি মৌলিক পদার্থের প্রাধান্য থাকায় একে সিয়াল ( SI - AI ) ভূত্বক বলে । সাধারণভাবে মহাদেশগুলি এই সিয়াল চুত্বকে তৈরি হয় । এই শিলাস্তরের মধ্য দিয়ে ভূমিকম্পের P তরঙ্গ প্রতি সেকেন্ডে 6.2 কিমি বেগে প্রবাহিত হয় । সর্বাধিক 70 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত । মহাদেশীয় অংশে গড় গভীরতা 35 কিনি । পৃথিবীর নবীন ভঙ্গিল পর্বতমালার অংশে মহাদেশীয় ভূত্বকের গভীরতা

(B ) সামুদ্রিক ভূত্বক ( Oceanic crust ) :

মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরায় উত্থিত ম্যাগনার দ্বারা নবীন সামুদ্রিক ভূত্বকের সৃষ্টি হয় । ভূত্বকের নিম্নাংশ ব্যাসল্ট জাতীয় ক্ষারকীয় ( basic ) শিলাদ্বারা গঠিত । এই স্তরে সিলিকন বা সিলিকা ( silica ) এবং ম্যাগনেসিয়ামের ( magnesium ) আধিক্য লক্ষ করা যায় । তাই একে ( Sima ) সিমা বলে । এই অংশটি নমনীয় এবং স্থিতিস্থাপক । এই স্তরে শিলার আপেক্ষিক গুরুত্ব সিয়াল অপেক্ষায় অধিক অর্থাৎ 2.9 থেকে 3.0 আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গুরুত্ব 3.4 পর্যন্ত হয়ে থাকে । এই শিলাস্তর সমুদ্রের তলদেশে সামান্য পরিস্তর বাদ দিয়ে প্রায় সর্বত্র । সামান্য বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 7 কিমি । স্থান অধিকার করেছে । এই স্তরে অবস্থানরত শিলাস্তরগুলির আপেক্ষিক গুরুত্ব অধিক বলে ভূকম্প তরঙ্গের গতিবেগ ব্যাসন্ট জাতীয় গাঢ় রঙের গুরুশিলাস্তরের নীচের অংশে শিলার মধ্যে অলিভিন ( olivin ) খনি বেশি যাকে বলে , এদের অ - ক্ষারকীয় শিক্ষা ( ultra - basic rock ) বলে । এই শিলায় P তরঙ্গের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪ কিনি । উপরি উল্লিখিত ভূত্বকের গঠন থেকে বোঝা যায় যে উপরের স্তর ( upper layer ) গ্রানাইন , মধ্যবর্তী স্তর ( centermediate layer ) ব্যাসন্ট এবং নীচের স্তর ( lower layer ) অতি ক্ষারকীয় শিলা নিয়ে গঠিত । 

[‡] গুরুমণ্ডল ( Mantle or Barysphere)

 ভূত্বকের নীচে থেকে কেন্দ্রমণ্ডল ( core ) পর্যন্ত সাজ ও পদার্থের অন্তবর্তী স্তরটিকে গুরুমণ্ডল বা Mantle বলে । ভূত্বকের মধ্যে প্রবাহিত P ও S তরঙ্গগুলি 8 , 30 এবং 70 কিমি তলে বুতগতি বৃদ্ধি করে । কারণ এই তলের নীচে বস্তুগুলির ঘনত্ব অধিক তাই Pos তরঙ্গের গতিবেগ হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে । 1990 সালে ভূমিকম্প বিজ্ঞানী এ মোহোরভিসিক প্রথম লক্ষ করেছেন বলে তাঁর নাম অনুসারে এই তল মোহোরোভিসিক তল নামে পরিচিত । এই তল থেকে 2900 কিমি গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত । এটি পৃথিবীর মোট আনের 34.53 শতাংশ । এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল

1 গঠন ( Structure ) :-

গুরুমণ্ডল খুব ঘন , ভারী অতি - ক্ষারকীয় শিলা দ্বারা গঠিত । এই শিলাগুলি লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজের সমন্বয়ে গঠিত । বায়োটাইট , অলিভিন , পাইরক্সিন ও অ্যাস্টিবোল হল এখানকার মূল খনিজ । গুরুমণ্ডলের নীচের অংশে থাকে ভারী খনিজ যথা পেরিক্রেজ , ম্যাগনেসিওসাইট ( magnesiowusite ) প্রভৃতি । 

2 তাপমাত্রা ( Temperature ) :-

এই স্তরের গড় তাপমাত্রা । প্রায় 200 ° C , যদিও তাপমাত্রা ওপর থেকে নীচের দিকে ক্রমশ বাড়ে । 100 কিনি গভীরতায় তাপমা ত্রা 1200 1300 ° C- এর কাছাকাছি আর 700 কিমি গভীরতায় 1900 ° সে . এবং 2900 কিমি গভীরতায় প্রায় 2500-3000 ° C বলে ধরা যায় ।

 3 ঘনত্ব ( Density ) :-

গুরুমণ্ডলের গড় ( 332-52 / সেমি । এই স্তরে ওপর থেকে নীচের দিকে ঘনত্ব ক্রমশ বাড়ে । বহিঃগুরুমণ্ডলের 200-700 ) ঘন 4.29 গ্রাম / খন সেমি এবং অন্তঃগুরুমণ্ডলের ( 700-2900 কিমি ) । 5.66 গ্রাম / ঘন সেমি ধরা হয় । অর্থাৎ গুরুমণ্ডলের ঘনত্ব মোটামুটিভাবে জলের চেয়ে 4-5 গুণ ভারী ।

4 চাপ ( Presure ) :-

গুরুমণ্ডলের গড় চাপ প্রায় 855 কিলোবার । বহিঃগুরুমণ্ডলের চাপ 260 কিলোবার এবং অন্তঃগুরু মণ্ডলের চাপ প্রায় 1350 কিলোবার ।

 5 উপবিভাগ ( Subtypes ) :-

 গঠনকারী উপাদানগুলির তারতমা এবং তরঙ্গের গতিবেগের উপর নির্ভর করে গুরুমণ্ডলকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা-

 ( A ) বহিঃগুরুমণ্ডল ( Upper Mantle ) 

গুরুমণ্ডলের উপরের অংশটি মোহোরোভেসিক বিযুক্তি রেখা থেকে প্রায় 410 কিমি গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত । অর্থাৎ এই স্তরের বিস্তার 100 থেকে 410 কিমি । এটি সমগ্র পৃথিবীর আয়তনের পরিপ্রেক্ষিতে 10.3 শতাংশ স্থান অধিকার করে রয়েছে । এই স্তরের মূল নিজ হল অলিভিন ও পাইরঙ্গিন । এই সব খনিজ ক্রোমিয়াম , লোহা , সিলিকা এবং ম্যাগনেসিয়ামের ভাগ বেশি থাকায় এই অংশকে ক্লোফেসিমা ( Chro - Fe - Si - Ma ) বলে । এই অংশের প্রায় 300 কিমির কাছাকাছি প্রায় সমস্ত উপাদান গলনাঙ্কের কাছাকাছি থাকায় আংশিক নরম কিংবা অর্ধতরল অবস্থায় উত্তপ্ত ম্যাগনা ৰূপে অবস্থান করে । শিলার ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এই স্তরে ' P ' ও ' S ' তরঙ্গের গতিবেগ ভীষণভাবে কমেযায় । এই মণ্ডলে প্রধান শিলা পেরিডোটাইট যাতে জলের পরিমাণ প্রায় 0.1 শতাংশ । বহিঃগুরুমণ্ডলের এই ওপরের অংশ আসথেনোয়ার ( asthenosphere ) নামে পরিচিত ।

 ( B ) মধ্য গুরুমণ্ডল ( Transition Mantle ) 

 অভ্যন্তরে 410 থেকে 650 কিমি মধ্যবর্তী অঞ্চল মধ্য গুরুমণ্ডল নামে । পরিচিত । এটি সমগ্র পৃথিবীর 7.5 অংশ জুড়ে অবস্থিত । অ্যালুমিনিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ এখানকার মূল উপাদান । এই খনিজ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সহজেই গলে গিয়ে ব্যাসল্ট জাতীয় ম্যাগমায় পরিণত হয় এবং এই ম্যাগমা কখনো কখনো বিশেষ পরিস্থিতিতে লাভা রূপে বাইরে বেরিয়ে আসে । 

( C ) অন্তঃগুমণ্ডল ( Inner or Lower Mantle )

 ভূ - অভ্যন্তরে 650 থেকে 2900 কিমি পর্যন্ত অংশকে অন্তঃগুরুমণ্ডল বলে । এই অংশের বিস্তার প্রায় 2350 কিমি । এই স্তর সমগ্র পৃথিবীর প্রায় 49.2 শতাংশ স্থান জুড়ে রয়েছে । এই স্তরের নিম্নাংশে ' P ' তরঙ্গের গতিবেগ প্রায় 13.7 কিমি / সেকেন্ড এবং ' S ' তরঙ্গের গতিবেগ প্রায় 7.3 কিমি / সেকেন্ড । লোহা , নিকেল , সিলিকা ও ম্যাগনেসিয়াম হল এই স্তরের মূল উপাদান সেজনা এই স্তরকে নিফেসিমা ( Ni - Fe - Si - Ma ) বলে । এই পদার্থগুলি তুলনামূলক ভাবে ভারী বলে এই অংশের ঘনত্ব অধিক অর্থাৎ 5.6 থেকে 9.9 গ্রাম / ঘনসেমি .।

 [‡] কেন্দ্রমণ্ডল ( Core or Centroshpere)

 ভূ - অভ্যন্তরে 2900 কিমি গভীরতা থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত অর্থাৎ 6370 কিনি পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশটি হল পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডল । পৃথিবীর কেন্দ্রের চারদিকে প্রায় 3486 কিমি জুড়ে যে ভারী ও ঘন পদার্থের স্তর রয়েছে তাকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে । এটি সমগ্র পৃথিবীর রের প্রায় 32.5 অংশ এবং আয়তন 16.20 শ অধিকার করে রয়েছে । এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল এই স্তরের সীমানা বরাবর PS তরঙ্গের সর্বাধিক গতিবিক্ষেপ । ঘটে । বিযুক্তিতল বরাবর P তররে গতিবেগ হঠাৎ কমে যায় অর্থাৎ 13.7 কিমি / সেকেন্ড থেকে কমে গিয়ে দাঁড়ায় 8.4 কিমি / সেকেন্ড আসে । সেইসঙ্গে তরঙ্গ সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে যায় । 

1 গঠন ( Structure ) :-

লোহা , নিকেল , কোবাল্ট প্রভৃতি ভারী ও ঘন পদার্থের সমন্বয়ে কেন্দ্রমণ্ডল গঠিত । এদের মধ্যে নিকেল ( NI ও লোহার পরিমাণ বেশি থাকে বলে একে সংক্ষেপে নিয়ে ( Nife বলে । এছাড়া বিজ্ঞানীদের অনুমান এই স্তরে সিলিকন ( SI ) কার্বন ( C ) , গন্ধক ( 5 ) এবং ম্যাগনেসিয়াম ( Mg ) ঘনীভূত অবস্থায় রয়েছে

 2 তাপমাত্রা ( Temperature ) :-

এই স্তরের তাপমাত্রা খুব বেশি । বিজ্ঞানীদের অনুমান পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা 5430 ° C , যা সূর্যের বহিঃপৃষ্ঠের তাপমাত্রার প্রায় সমান এবং বাইরের দিকে তাপমাত্রা ক্রমশ কমে 4000 ° C থেকে 4400 ° C

3 ঘনত্ব ( Density ) :-

 এই স্তরে সমস্ত ভারী মৌল থাকার ফলে ঘনত্ব যথেষ্ট বেশি নয় । এই স্তরে গড় ঘনত্ব 10-10.6 প্রোয় সেমি । অস্তাকেন্দ্রমণ্ডল এবং বহিঃকেন্দ্রমণ্ডলে ঘনত্বের পার্থক্য লক্ষ করা যায় । বহিঃকেন্দ্রমণ্ডলের ঘনত্ব প্রায় 9.9 12.2 প্রায় / ঘন সেমি এবং অন্তঃকেন্দ্রমণ্ডলের ঘনত্ব প্রায় 12.8-13.1 গ্রাম / ঘন সেমি । অর্থাৎ এই অংশ জলের থেকে 10 13 গুণ ভারী ।

4 চাপ ( Presure ) :-

এই স্তরে গড় চাপের পরিমাণ প্রায় 3680 কিলোবার । কেন্দ্রমণ্ডলের নীচের অংশে অর্থাৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি এই চাপ বেড়ে হয় প্রায় 3700 কিলোবার এবং বাইরের অংশে প্রায় 3340 কিলোবারের কাছাকাছি পৌঁছায় ।

5 উপবিভাগ ( Sub - Types ) :-

কেন্দ্রমণ্ডলের দুটি অংশ যথা অন্তঃকেন্দ্রমণ্ডল এবং বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল । 

 (A ) অন্তঃগুরুমণ্ডল ( Inner Core ) :

 এই অংশ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে 1220 কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে রয়েছে । অর্থাৎ এর বিস্তার 5150-6370 কিমির মধ্যে । এটি সমগ্র পৃথিবীর ভরের 1.7 শতাংশ অধিকার করে আছে । এই স্তরে P তরঙ্গ অত্যন্ত দ্রুত বেগে অতিক্রম করে । সেইজন্য বিজ্ঞানীদের অনুমান এটি এখনও কঠিন অবস্থায় রয়েছে । 

( B ) বহিঃগুরুমণ্ডল ( Outer Core ) :

 কেন্দ্রমণ্ডলের বাইরের 2240 কিমি অংশকে বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল বলে । এটি 2890 থেকে 5150 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত । বিজ্ঞানীদের অনুমান S তরঙ্গ এই অংশে প্রবেশ করতে পারে না বলে এটি এখনও তরল অবস্থায় রয়েছে । এই অংশের ঘনত্ব সর্বাধিক প্রায় 13 গ্রাম / ঘন সেমি এবং এটি পৃথিবীর ভরের 30.8 শতাংশ অধিকার করে আছে । এখানে লোহা ( Fe ) ও নিকেল ( Ni ) ঘনীভূত অবস্থায় রয়েছে ।


Middle post ad 01