মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ (Classification of soils)
★ মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ (Classification of soils) ★
● ভূমিকা :
মাটির গুণাগুণের উপর ফসল উৎপাদন নির্ভর করে। তাই মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। আবার, মাটির গুণাগুণ সুস্পষ্টভাবে জানতে গেলে মাটিকে বিভিন্নভাগে ভাগ করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। মাটির শ্রেণিবিভাগ হল | মাটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের মাটিকে শ্রেণিভূক্ত করা।
● মাটির শ্রেণিবিভাগের উদ্দেশ্য :
(i) মাটির বৈশিষ্ট্য বা গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা তৈরী। (ii) মাটির প্রকৃতি, উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা সম্পর্কে ধারণা নির্ধারণ, (iii) মাটির বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়, (iv) ভূমি ব্যবহার সম্পর্কে নীতি নির্ধারণ, (v) মাটির শ্রেণিবিভাগের ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও উন্নয়নমূলক কাজকর্ম সম্পাদন।
● মাটির শ্রেণিবিভাগ ঃ
অতি প্রাচীনকালেই চাষ-আবাদের নিরীখে মাটির শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে। তখন মাটি বলছে বোঝাত ঊর্বর বা অনুর্বর মাটি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মৃত্তিকার আধুনিক শ্রেণিবিভাগ শুরু হয়।
● ডকুচেড এর মতানুযায়ী মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ:
1890 সালে রাশিয়ার মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ডকুচেভ উৎপত্তির উপ ভিত্তি করে মাটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন—(a) আঞ্চলিক মাটি, (b) আন্তঃ আঞ্চলিক মাটি, (c) অনাঞ্চলিক মাটি।
(a) আঞ্চলিক মাটি (Zonal Soil) :
জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর ভিত্তি করে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে মাটি গড়ে ওঠে তাকে আঞ্চলিক মাটি বলে। এই মাটির পরিলেখ ও হোরাইজন স্পষ্ট। পঞ্জল, চার্নোজেম, সিরোডেম, ল্যাটেরাইট প্রভৃতি হল এই প্রকার মাটি।
(b) আন্তঃ আঞ্চলিক মাটি (Intrazonal Soil) :
ভূপ্রকৃতি ও শিলার বৈশিষ্ট্যের প্রভাবে আঞ্চলিক ম্যাটির মধ্যেই যে বিশেষ ধরনের মৃত্তিকা গড়ে ওঠে তাকে আন্তঃ আঞ্চলিক মাটি বলে। আম্লিক, ক্ষারকীয়, পিট প্রভৃতি হল আন্তঃ আঙুলিক মাটি।
(c) অনাঞ্চলিক মাটি (Azonal Soil):
উৎপত্তিস্থল থেকে প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে বাহিত হয়ে অন্যস্থানে সজ্জিত মাটি হল অনাঞ্চলিক মাটি। পলিমাটি, বেলেমাটি, লোয়েস প্রভৃতি হল অনাঞ্চলিক মাটি।